স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও পরকীয়ায় আসক্তির অভিযোগে স্বামী অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানকে ডিভোর্স দিয়েছেন মডেল-অভিনেত্রী মারিয়া মিম। দুজনের সিদ্ধান্তেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন মিম। গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর করেন মিম। ২৩ অক্টোবর ডিভোর্স পেপার সিদ্দিকের হাতে পৌঁছাবে বলে জানান তিনি।
মিমের অভিযোগ, ‘কিছু দিন আগেই একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করার কথা থাকলেও বিজ্ঞাপনটির নির্মাতা রানা মাসুদকে সিদ্দিক প্রভাবিত করেছেন তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নেয়ার জন্য। সিদ্দিক নিজেও একজন শোবিজের মানুষ। অভিনয় করেন। এতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু স্বামী হিসেবে আমি ওর কাছে কোনো সহযোগিতা পাই না।’
সিদ্দিক এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, মিডিয়ার কাজ নয়, অন্য কোনো কারণেই মিম তাকে ডিভোর্স দিতে চায়। তখন মিমের চারিত্রিক ত্রুটি নিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি৷
তার জবাবে মিম গণমাধ্যমে সিদ্দিকের পরনারীতে আসক্তির কথা জানান। বিভিন্ন সময় তার ওপর নির্যাতন করতেন সিদ্দিক সেই কথাও বলেন। স্বামী হিসেবে সিদ্দিককে ব্যর্থ দাবি করে তার জীবন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তারই প্রেক্ষিতে ১৯ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্দিককে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন তিনি।
এদিকে আজ সোমবার নিজের ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে সিদ্দিকের সঙ্গে সংসারের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান মিম। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমি একজন মেয়ে বলেই আমাকে সব কিছু মেনে নিতে হবে। মেনে নিতে হবে সকল অত্যাচার, সহ্য করতে হবে সকল মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন। শুনতে হবে সকল মিথ্যা অপবাদ। রাতের পর রাত, দিনের পর দিন সবকিছু সহ্য করেছি এবং একা একা কেঁদেছি।
অনেক আগেই চেয়েছিলাম সম্পর্কটা শেষ করে দেই, তখনই বাধা দেওয়া হয়েছে কারণ তুমি একজন নারী। তোমার সবকিছু এডজাস্ট এবং স্যাক্রিফাইস করতে হবে। একটা মেয়ে তার সবকিছু ছেড়ে দিয়ে একটা নতুন মানুষের সাথে ঘর বাঁধে, স্বপ্ন দেখে সারা জীবন একসাথে থাকবে, স্বপ্ন দেখে সুন্দর একটা সংসার। কিন্তু সেই মানুষটা যখন বদলে যায় এবং ভুলে যায় স্ত্রীর প্রতি সমস্ত দায়িত্ববোধ এবং কর্তব্যবোধ তখন হতাশা আসে।
কীভাবে একজন স্ত্রী মেনে নিতে পারে তার স্বামীর সাথে অন্য মেয়ের সম্পর্ক, কীভাবে মেনে নিতে পারে রাতের পর রাত স্বামীর বাসায় না ফেরা। কারণ সে একজন নারী এবং নারী বলেই সবকিছু চোখ বন্ধ করে সহ্য করতে হবে। কিন্তু আর কত সহ্য করবো, আর কতবার নির্যাতনের শিকার হবো। তাই সবকিছুর পরে অনেক চিন্তা ভাবনা করে আমি ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেই।
কারণ আমিও মানুষ, আমারও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। অবশেষে বাধ্য হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের কাগজে স্বাক্ষর করে জমা দিয়েছি। একটা দীর্ঘদিনের বেদনা, কান্না এবং চাপা কষ্ট সবকিছু নিয়ে সিদ্দিকুর রহমানের সাথে আমি আমার সম্পর্ক ছিন্ন করেছি।’
একমাত্র ছেলেকে সিদ্দিক দেখা করতে দেয় না দাবি করে তিনি লেখেন, ‘আমাদের সেপারেশনের পর থেকে সিদ্দিকুর রহমান আমার একমাত্র আদরের সন্তান আরশ হোসাইনের সাথে দেখা করতে দেয় না এবং কথাও বলতে দেয় না। এই জন্য আমি সিদ্দিকুর রহমানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাবো যেন আমার বাচ্চা আমার কাছে থাকে। একমাত্র একটা মা জানে তার সন্তানের সাথে দেখা না করার, কথা না বলা কতটা কষ্টের এবং দুঃখের।’