আল্লাহর বিধান পালনের পাশাপাশি তার রহমত মুমিন মুসলমানের শ্রেষ্ঠ চাওয়া এবং পাওয়া। কেননা আল্লাহর রহমত ছাড়া আমল ও ইবাদত দিয়ে কোনো মুমিন বান্দাই নাজাতে আশা করতে পারবে না।
আল্লাহ তাআলা যেদিন বান্দার প্রতি কাজে হিসাব নেবে। সে দিন আল্লাহর আদালতে দুনিয়ার সব কাজে হিসাব দেয়া সহজ হবে না। তাইতো মুমিন মুসলমান বিভিন্ন আমল ও ইবাদতে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। আল্লাহর কাছে তার রহমত কামনা করেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ্বমানবতার জন্য মুক্তির দূত হিসেবেই দুনিয়াতে এসেছেন। রহমতের দরজাগুলোর কথা তার উম্মতকে জানিয়ে দিয়েছেন। যেখানে রয়েছে দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তির আলাপন।
দুনিয়াতে মানুষ যখন গোনাহমুক্ত থাকে তখন তার মন থাকে প্রশান্ত ও প্রফুল্ল। প্রশান্ত ও প্রফুল্ল মনের অধিকারী ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদতে নিজেকে উজাড় করে দিতে সক্ষম হয়। তখনই মহান আল্লাহ তার রহমতের কোলে সে বান্দাকে ঠাঁই দেন।
তাই গোনাহমুক্ত থাকার ছোট্ট একটি আমল হলো সব সময় পবিত্র থাকা। পবিত্র থাকার অন্যতম কাজ মাধ্যম হলো ওজু। কেননা ওজুর সময় মানুষের প্রতিটি অঙ্গের গোনাহসমূহ ঝরে যায়। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (মুসলিম বা মুমিন) বান্দা ওজু করার সময়, যখন সে মুখমণ্ডল ধোয়, তখন পানির সঙ্গে ওই (মুখের) সব গোনাহ বের হয়ে যায়। যা সে দুই চোখ দ্বারা করেছিল।
যখন সে দুই হাত ধোয়, তখন হাত দ্বারা করা সব গোনাহ পানির সঙ্গে বের হয়ে যায়।
যখন সে দুই পা ধোয়, তখন তার পা দ্বারা সংঘটিত সব গোনাহ পানির সঙ্গে বের হয়ে যায়। এভাবে সে গোনাহ থেকে মুক্তি পায়।’ (মুসলিম)
এ আমলকারীর জন্য জান্নাতের ৮টি দরজাই খুলে রাখা হয়। হাদিসে এসেছে- হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ভালোভাবে অজু করে অতঃপর বলে- اَشْهَدُ اَن لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَ رَسُوْلُهُ
উচ্চারণ: ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ।’ তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা, সে প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম, তিরমিজি)
মনে রাখা জরুরি: যারা দুনিয়াতে ইবাদত-বন্দেগিসহ সব কাজে ওজুর সঙ্গে থাকবে, কেয়মাতের কঠিন পরিস্থিতিতে মুমিন বান্দাদের ওজুর স্থানগুলো থেকে নূর চমকাতে থাকবে। তা দেখে দেখে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে খুঁজে বের করে নেবেন।
শুধু তা-ই নয়, ওজুকারী বান্দার জন্য আল্লাহর জান্নাত আবশ্যক হয়ে যায় বলেছেন বিশ্বনবি। হাদিসে এসেছে- ‘কোনো মুসলিম যখন উত্তমরূপে অজু করত তার চেহারা-মন উভয়কে আল্লাহ অভিমুখী করে (নামাজে) দাঁড়িয়ে যায় এবং দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে তখন তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় ওজু অবস্থায় থাকার তাওফিক দান করুন। ওজুর আমলের মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা দান করুন। আমিন।