Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ambiaআমার শখের বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম ভ্রমণ। তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি শহর দেখতে। ভ্রমণের মাধ্যমে নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করে জীবনকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নেওয়ায় আমার নেশা। প্রকৃতির চেয়ে বড় বিদ্যালয় আর কিছু নেই।

কথাগুলো বলছিলেন, ভ্রমণ পিপাসু নিউইয়র্ক প্রবাসী আম্বিয়া অন্তরা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০টিরও বেশি শহর ঘুরেছেন। হিপ্পো অগস্টিনের ভাষায় বলতে গেলে, বিশ্ব একটি বই এবং যারা ভ্রমণ করে না তারা যেন এই বইয়ের শুধুমাত্র একটা পৃষ্ঠা পড়ল। পর্যটন নিছক বিনোদনের উপাদান নয়। মুক্ত জ্ঞানার্জন ও চিন্তার গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।

chardike-ad

ভ্রমণের প্রতি সেই শৈশব থেকে স্বভাবজাতভাবেই আগ্রহের মাত্রা বেশি। দুইদিন আগেও ঘুরে আসলাম নিউইয়র্ক সিটির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হাডসন নদীর তীর ছুঁয়ে উত্তর নিউজার্সির মাঝখানে লিবার্টি স্টেট পার্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্টের অঙ্গরাজ্যের ভেতরে। উত্তর নিউজার্সি পর্যটকদের জন্য সত্যিই অসাধারণ জায়গা।

একটি সবুজ মরুদ্যান, যেন ঐশ্বরিক সৌন্দর্যের পাঠশালা। ঐতিহ্য এবং স্মৃতি বিজড়িত বিস্ময়ের প্রতীক। খোলা আকাশে ৯/১১ মেমোরিয়াল হলো নিউজার্সির স্মৃতিসৌধ। ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ সালে ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার’ জীবন হারানো নিউজার্সির ৭ হাজার ৪৪৯ জন মানুষের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানায়।

নিহতদের নামগুলো দুটি ব্রাশ স্টেইনলেস স্টিলের দেওয়ালে লেখা রয়েছে। নামগুলো চার ইঞ্চি লম্বা হবে। সুন্দরভাবে খোদাই করা রয়েছে। স্মৃতিসৌধটি, জেসিকা জামরোজ এবং ফ্রেডেরিক শোয়ার্জ ডিজাইন করেছিলেন। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১০, ২০১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে উৎসর্গ করা হয়েছিল।

এ ছাড়া ব্রাশ করা স্টেইনলেস স্টিলের দুটি দেওয়াল ২১০ ফুট দীর্ঘ, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টাওয়ারগুলোর প্রতিটি পাশের প্রস্থ। এগুলো ৩০ ফুট উঠে এবং একে অপরের সাথে সমান্তরালভাবে দাঁড়িয়ে ১২ ফুটের প্রশস্ত পথ। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মতো, স্টেইনলেস স্টিলের দিনের ক্রমাগত পরিবর্তিত আলো প্রতিবিম্ব হয়। সৌধটি দর্শকদেরকে আক্ষরিক এবং রূপকভাবে খোলা আকাশের দিকে তাকাতে আমন্ত্রণ জানায়।

ম্যানহাটনের স্কাইলাইন, স্ট্যাচু অব লিবার্টি এবং এলিস দ্বীপটিকে দর্শনীয় পটভূমি। লিবার্টি স্টেট পার্কটি রাজ্যের অন্যতম ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান।

নিউজার্সির টার্মিনালের ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল রেলপথ (সিআরআরএনজে), উত্তর-পূর্বে নিউজার্সির বেশিরভাগ পরিবহন ইতিহাসের জন্য একটি দুর্দান্ত স্থাপনা।

এ ছাড়া পার্কের উত্তর প্রান্তে হাডসন নদীর দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য পর্যটকদের অবাক করে। শিক্ষামূলক ট্যুর আমাকে বিশ্বব্যাপী আইকনিক এবং ঐতিহাসিক গন্তব্যে নিয়ে যায়। যেখানে কেবল অবস্থানের সংস্কৃতিই অনুভব করি না ইতিহাস এবং ঘটনাগুলো যা এটির আকার ধারণ করেছে তা বুঝতে পারি। হৃদয় ও মনের প্রসার এবং চিন্তা-চেতনা বিকাশের জন্য ভ্রমণ অপরিহার্য।

গোধূলি আকাশ আর গোলাপী সন্ধ্যের সন্ধিক্ষণে নদীর মাঝে ছড়িয়ে থাকা ঐশ্বরিক সৌন্দর্যের পরিপূর্ণ সম্ভার স্বচোখে অবলোকন করে অবচেতনভাবেই স্রষ্টার প্রতি বিনম্র হয়ে পড়ে মন।

লেখক- আম্বিয়া অন্তরা, নিউইয়র্ক থেকে