দুবাই প্রবাসী নূরুল ইসলামের (৪৫) দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বাঁচতে হলে তাকে যেভাবেই হোক একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। কিন্তু কে দেবে তাকে একটি কিডনি। এই অবস্থায় চোখে-মুখে যখন অন্ধকার দেখছিলেন নূরুল। ঠিক তখনই আশার আলো হয়ে পাশে দাঁড়ালেন স্ত্রী। নিজের জীবনের কথা না ভেবে স্বামীকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়েছেন তিনি।
স্বামীর প্রতি ভালোবাসার অনন্য এই দৃষ্টান্ত গড়েছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ঘোলসা গ্রামের হোসনা বেগম (৪০)। গত ১৬ অক্টোবর স্ত্রীর দেওয়া কিডনি দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে নূরুলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সবার প্রসংশায় ভাসছেন হোসনা।
জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির ঘোলসা গ্রামের মৃত আব্দুস শুক্কুরের ছেলে দুবাই প্রবাসী নূরুল ইসলামের সঙ্গে প্রায় পঁচিশ বছর আগে একই গ্রামের রওয়াব আলীর মেয়ে হোসনা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জীবিকার তাগিদে নূরুল পাড়ি জমান দুবাইয়ে। সেখানে তিনি গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। পারিবারিক জীবনে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।
এদিকে গত কয়েক বছর থেকে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন নূরুল ইসলাম। সম্প্রতি পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে তাঁর দুটি কিডনি একেবারে নষ্ট হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এই অবস্থায় বাঁচতে হলে তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। নূরুলের দুটি কিডনি নষ্ট হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন তাঁর স্ত্রী হোসনা বেগম।
এদিকে কে দেবে নূরুলকে কিডনি এই কথা ভেবে তিনি যখন চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছিলেন। ঠিক তখনই স্ত্রী হোসনা বেগম জানালেন নূরুলের জীবন বাঁচাতে তিনি তাঁকে একটি কিডনি দিতে চান। এরপর সম্প্রতি হোসনা যান দুবাইয়ে স্বামীর কাছে। সেখানে আবুধাবী শেখ খলিফা হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুজনের কিডনি মিলে যাওয়ায় গত ১৬ অক্টোবর ওই হাসপাতালে চিকিৎসকরা হোসনার দেওয়া কিডনি নূরুলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হন।
দেশে থাকা দুবাই প্রবাসী নূরুল ইসলামের মামাতো ভাই সাইফুল ইসলাম জিবু শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। তিনি জানান, হোসনা আপা নূরুল ভাইকে কিডনি দিয়ে যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।