শক্তিশালী টাইফুন হাগিবিসের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে জাপান। এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও ১৭ জন। অপরদিকে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ১৬৬ জন। উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানে এক লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছে।
শক্তিশালী ওই ঘূর্ণিঝড় নিগানো, নিগাতা, মিয়াগি, ফুকুসিমা, ইবারাকি, কানাগাওয়া এবং সাইতামাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব স্থানে উদ্ধার অভিযান চলছে।
এর আগে জাপানের ইতিহাসে এমন প্রলয়ঙ্করী ঝড় দেখা যায় ১৯৫৮ সালে। সে বছর টাইফুন কানোগাওয়ার এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। রাজধানী টোকিও ও পূর্বাঞ্চলের ওপর ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়ে সুপার টাইফুন হাগিবিস। প্রলয়ঙ্করী এই ঝড়ের তাণ্ডবে টোকিওর কিছু অংশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
গত ৬০ বছরের মধ্যে এটাই জাপানের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে রাজধানী টোকিওর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজু দ্বীপে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভূমিধস আঘাত হানে। স্থানীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, টোকিও উপসাগরে পানামার একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। এতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
শক্তিশালী এই ঝড়ের কারণে রাগবি ওয়ার্ল্ড কাপের তিনটি ম্যাচ বাতিল করা হয়। তবে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হওয়ায় শেষ পর্যন্ত জাপান এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই ম্যাচে ২৮-২১ পয়েন্টে জিতেছে জাপান। ফলে প্রথমবারের মতো দেশটি কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে।
ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে মূল ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়ার আগে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে কয়েক হাজার পুলিশ, দমকল বাহিনী, উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং সেনা সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের আগেই ৭০ লাখ মানুষকে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, মাত্র ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।