এবার জিটুজি (সরকারি ব্যবস্থাপনায়) পদ্ধতিতে নয়, বেসরকারি খাতের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো হবে। দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার উন্মুক্ত করা নিয়ে এ ধরনের নতুন সমঝোতায় পৌঁছাতে চেষ্টা করছে দুই দেশ।
ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দফা বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগির দু’দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ সচিব মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘এখনো বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে আছে। আরও একটি বৈঠক হবে। ওদের (মালয়েশিয়া) তারিখ জানানোর কথা। তারিখ নির্ধারিত হলে আমাদের সেখানে যাওয়ার কথা। তবে আমরা এখনো তারিখ পাইনি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলোচনার জন্য মালয়েশিয়া আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা ইয়েস বলেছি। আশা করছি, আলোচনা থেকে ইতিবাচক কিছু বের হয়ে আসবে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, মালয়েশিয়া বাংলাদেশি কর্মী নিতে আগ্রহী। এ কারণে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ, রিক্রুটিং এজেন্সি চূড়ান্ত করা, নিয়োগদাতাদের জবাবদিহিতা ইত্যাদি বিষয় চূড়ান্ত করতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
২০১৬ সালের চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাত্র ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে পারত। কিন্তু তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে শ্রমিক পাঠানোর খরচ চার লাখ টাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। এরপর গত বছর মাহাথির মোহাম্মাদ পুনরায় ক্ষমতা এসে ওই চুক্তির অধীনে অনৈতিক ব্যবসা হয়েছে- এমন কারণ দেখিয়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়া বন্ধ করে মালয়েশিয়া। ফলে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান এই শ্রমবাজারটি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ রয়েছে। তবে এই সময়ের মধ্যে নতুন চুক্তির জন্য আলোচনা শুরু করে দুই দেশ। এই আলোচনার মাধ্যমে দুদেশ নতুন সমঝোতায় পৌঁছাতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের চুক্তির অনেক কিছুতে পরিবর্তন এনে নতুন একটি প্রটোকল নিয়ে আলোচনা চলছে। দুদেশের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তিন দফা বৈঠক করেছেন। গত মে মাসে মালয়েশিয়ায় সর্বশেষ বৈঠকটি হয়েছে ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নতুন প্রটোকলে মেডিকেল, কল্যাণ ও ইন্স্যুরেন্সের বিধানও রাখা হয়েছে। এই খরচের একটি অংশ মালিক এবং একটি অংশ শ্রমিক বহন করবে। তবে কোন পক্ষ কত শতাংশ বহন করবে সে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়া কোনো শ্রমিক মালয়েশিয়ায় আটক হলে বা ভিসার মেয়াদের অতিরিক্ত সময় অবস্থানর করলে তাদের দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সহায়তা করবে বলেও সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ৩০ হাজার ৪৮৩ জন, ২০১৬ সালে ৪০ হাজার ১২৬ জন, ২০১৭ সালে ৯৯ হাজার ৭৮৭ জন এবং ২০১৮ সলের প্রথম সাত মাসে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৬২ জন বাংলাদেশি শ্রমিক হিসেবে মালয়েশিয়ায় গেছেন।