প্লেঅফের টিকিট পেতে দুই দলেরই জয়ব্যতীত অন্য কিছু ভাবার সুযোগ ছিলো না। ফলে অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনালে পরিণত হয় সেন্ট লুসিয়া জুকস ও বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টসের মধ্যকার ম্যাচটি। যেখানে ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় আধিপত্য বিস্তার করেছে ড্যারেন স্যামির সেন্ট লুসিয়া, জয়টাও ছিলো সময়ের ব্যাপার।
সেখান থেকে লেগস্পিনার হেইডেন ওয়ালশের জাদুকরী বোলিংয়ে ম্যাচ জিতে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস। অবিশ্বাস্য এক জয়ে সেন্ট লুসিয়াকে বিদায় করে চতুর্থ দল হিসেবে শেষ চারের টিকিট পেয়েছে বার্বাডোজ। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে সাকিবদের জয়ের ব্যবধানটা ২৪ রানের।
স্কোরকার্ড বলবে বার্বাডোজের করা ১৪১ রানের জবাবে ১১৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছে সেন্ট লুসিয়া। যে কারণে ২৪ রানের জয় পেয়েছে বার্বাডোজ। কিন্তু স্কোরকার্ড কখনোই এটি জানান দিতে পারবে না একপর্যায়ে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ১১১ রান করে ফেলেছিল সেন্ট লুসিয়া। প্লেঅফ নিশ্চিত করতে শেষের ২৮ বলে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র ৩১ রান করতে হতো তাদের।
শুধু টি-টোয়েন্টি নয়, যেকোনো ফরম্যাটের জন্যই বেশ সহজ এক সমীকরণ। কিন্তু এটিই অসম্ভব করে দিয়েছেন বার্বাডোজ লেগি হেইডেন ওয়ালশ। ইনিংসের ১৬তম ওভারে প্রথম আঘাতটা হানেন হ্যারি গার্নি। পরের ওভারেই সেন্ট লুসিয়ার পকেটে থাকা ম্যাচটি বের করে আনেন ওয়ালশ। মাত্র ১ রান খরচায় সাজঘরে ফেরত পাঠান তিন ব্যাটসম্যানকে।
ফলে হুট করেই ৪ উইকেটে ১১১ থেকে ৮ উইকেটে ১১৩ রানের দলে পরিণত হয় সেন্ট লুসিয়া। তখন জয়ের দাবিদার বার্বাডোজই। ১৮তম ওভারের শেষ বলে নবম উইকেট তুলে নেন গার্নি আর ১৯তম ওভারে সেন্ট লুসিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন ওয়ালশই। সবমিলিয়ে ৩.৪ ওভারের স্পেলে ২৬ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন ওয়ালশ। কম যাননি গার্নিও, ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রানের বিনিময়ে তার শিকার ৩ উইকেট।
ম্যাচে সাকিব আল হাসানের অবদানও কম নয়। প্রথমে ব্যাট হাতে জনসন চার্লসের সঙ্গে গড়েছেন ৬২ রানের জুটি। আগেরদিন মাত্র ২৫ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেললেও, এদিন সাকিব আউট হয়েছেন ২১ বলে ২২ রান করে। চার্লসের ব্যাট থেকে আসে ৩৬ বলে ৪৭ রান। এছাড়া ২৮ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত থাকেন জাস্টিন গ্রিবস। বার্বাডোজ পায় ৬ উইকেটে ১৪১ রানের সংগ্রহ।
পরে বল হাতে যথারীতি ইনিংস সূচনার দায়িত্ব বর্তায় সাকিবের কাঁধে, প্রথম ওভারে খরচ করেন মাত্র ৩ রান। তবে তার পরের ওভার থেকেই ১২ রান নিয়ে নেয় সেন্ট লুসিয়া। দুই ওভারে সাকিবের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ২-০-১৫-০। সেখান থেকে নবম ওভারে ফের আক্রমণে আসেন সাকিব। ততক্ষণে ৮ ওভারে ৭৭ রান করে ফেলেছে সেন্ট লুসিয়া।
দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে নিয়েই ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে পাঠান কলিন ইনগ্রামকে, কঠিন করে দেন সেন্ট লুসিয়ার জয়ের পথ। সেই ওভারে খরচ করেন ৩ রান। পরের ১৫তম ওভারে ফের আক্রমণে আসেন সাকিব এবং মাত্র ২ রান খরচ করে সমীকরণ আরও কঠিন করে দেন সেন্ট লুসিয়ার জন্য। সাকিবের এই ওভারের ঠিক পরেই গার্নি ও ওয়ালশের জাদুকরী স্পেলে ম্যাচ জিতে নেয় বার্বাডোজ।