নবীন পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্না পরপর দুটি ৬ হাজার মিটার পর্বতে ওড়ালেন লাল-সবুজের পতাকা। সম্প্রতি তিনি এ অভিযান সফলভাবে শেষ করেছেন। এর আগে কোন বাঙালি নারীকে পরপর এমন অভিযান করতে দেখা যায়নি। এসময় তিনি এলপাইন স্টাইলে মোট ৩টি অভিযানে অংশ নেন।
জানা যায়, গত ১৬ আগস্ট তিনি লাদাখের মারখা উপত্যকায় অবস্থিত কাং ইয়াতসে-২ পর্বতের পথে যাত্রা শুরু করেন। প্রচণ্ড বৈরি আবহাওয়ার কারণে যাত্রার ১ দিন পরই নেমে আসতে শুরু করেন। এসময় পাহাড়ি নালাগুলোতে পানির স্রোত বেড়ে যাওয়ায় অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল।
এরপর ২২ আগস্ট স্টক কাঙ্গরির পথে যাত্রা করেন। ২৩ আগস্ট স্টক কাঙ্গরি বেসক্যাম্পে পৌঁছে সেদিন রাত সাড়ে ১১টায় সামিটের উদ্দেশে রওনা হন। এসময় চলতে চলতে পায়ে ব্লিস্টার হয়ে যায়। সারারাত ট্রেক করার পর পরদিন সকাল ৮টা ৫৭ মিনিটে স্টক কাঙ্গরির সামিটে পৌঁছে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান।
২৫ আগস্ট বেসক্যাম্প থেকে লেহ শহরে ফিরে আসেন। ২৬ আগস্ট বিশ্রামের পর ২৭ আগস্ট পুনরায় কাং ইয়াতসে-২ এর উদ্দেশে যাত্রা করে চকদো পৌঁছান। ২৮ আগস্ট নিমালিং ও ২৯ আগস্ট বেসক্যাম্পে পৌঁছান। ২৯ আগস্ট রাতেই সামিটের উদ্দেশে যাত্রা করে পরদিন সকাল ৮টা ৩৪ মিনিটে কাং ইয়াতসে-২ এর চূড়ায় লাল-সবুজের পতাকা ওড়ান। এসময় চারপাশ হোয়াইট আউট হতে শুরু করে এবং সামিটে ৩০ মিনিট অবস্থানের পর বেসক্যাম্পের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
৩১ আগস্ট বেসক্যাম্প থেকে লেহ শহরে ফিরে আসেন। দুটি পর্বতেই তিনি নিজ পেশার প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রাথমিক পরিবারের পতাকা ওড়াতে ভোলেননি। তিনি পরিবারের সবার শুভকামনা করেন। অভিযানে সহযাত্রী হিসেবে ছিলেন নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ের শিক্ষক সৌরভ রাউতেলা ও তার শিক্ষার্থীরা।
চিত্রাপাড়ের মেয়ে রত্না পেশায় শিক্ষক। কিন্তু সাদা পাহাড়ের প্রতি অদম্য বাসনা তার। তাই শতবাধা পেরিয়ে পর্বতের পথে নিয়মিত অগ্রসরমান এ পর্বতারোহী। ২০১৬ সালে একটি ক্লাবের সাথে যুক্ত হয়ে কেওক্রাডংয়ের চূড়ায় যাওয়ার মধ্যদিয়ে শুরু হয় তার পথচলা। এরপর তিনি থেমে থাকেননি।
সে বছরই ক্লাবের সহযোগিতায় পর্বতারোহনের মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের উত্তরকাশির নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে যান। পরবর্তীতে মৌলিক প্রশিক্ষণ, উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। তিনি অভিযান করেন মাউন্ট কেনিয়া লেনানা পিকে। এটিই তার প্রথম ৬ হাজার মিটার পর্বত অভিযান।
পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পর্বতের পথে এ অভিযাত্রা অব্যাহত রাখবেন তিনি। প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের সবার দোয়া ও শুভকামনা প্রত্যাশা করেন রত্না। সেইসঙ্গে দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন তিনি।