দুবাই’র শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমকে নিজের নৌকায় দুবাই ক্রিক পার করালেন বাংলাদেশী নৌকা চালক মোহাম্মদ আলম। সোমবার দুবাই শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট ‘নদী’ দুবাই ক্রিক পাড়ি দিয়ে নগরীর অন্য পাড়ে যান দুবাই’র শাসক।
স্থানীয় ভাষায় ইঞ্জিনচালিত ছোট্ট নৌকাগুলোকে বলা হয় আবরা। সেখানে ১ দিরহামে পারাপারের ব্যবস্থা রয়েছে সাধারণ নাগরিকদের জন্য। সেখানকার এক আবরা চালক বাংলাদেশী মোহাম্মাদ আলম। সোমবার তার নৌকায় নদী পার হন শেখ মোহাম্মাদ।
গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে আবরা ঘাঁটে যান শেখ মোহাম্মাদ। অনেক আবরা চালক থাকলেো সৌভাগ্যবান হিসেবে আলমের আবরায় ওঠেন তিনি। যার ফলে সৌভাগ্যবান ড্রাইভার হিসেবে স্থানীয়দের মধ্যে মোহাম্মদ আলমের গল্পটি ছড়িয়ে পড়ে।
শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম’র এই সফরের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যে ভিডিওতে দুবাই’র ঐতিহ্যবাহী ১ দিরহামে নৌকা পারাপারের দৃশ্য দেখা যায়। তবে এই ভিডিও সর্বাধিক আলোচিত আবরা চালক আলম।
এই ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে সংবাদকর্মীরা কয়েক হাজার যাত্রী ও চালকদের মধ্য থেকে তাকে সন্ধান করতে শুরু করেন। তাদের প্রশ্ন ছিলো ‘সেই ভাগ্যবান চালক কে ছিলেন?’
আমিরাতের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজকে আলম বলেন, সোমবার কোন সাধারণ দিন ছিল না ! আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করেছি, আমাদের মধ্যে অনেক অবরা চালক ছিলেন। আমার বস আমাকে জানিয়েছিলেন যে সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের (আরটিএ) কিছু অফিসারের জন্য আবরাকে আলাদা রাখতে হবে। জানতাম না শেখ মোহাম্মদও আসছেন, তাই আমি এগিয়ে গেলাম এবং এর চেয়ে বেশি কিছুই ভেবে দেখিনি।
আলম আরো বলেন, শেখ মোহাম্মদ যখন আবরায় পা রেখেছিলেন, আমি তাকে প্রথমবারের মতো কাছ থেকে দেখে অবাক হয়েছি এবং খুব খুশি হয়েছি। তিনি আমার আমার সাথে হ্যান্ডশেক করে জিজ্ঞেস করলেন- আমি কেমন আছি এবং উত্তরে ভাল আছি জানিয়ে ধন্যবাদ জানালাম।
আলম বলেন, আমি শেখ মোহাম্মদকে নিয়ে নৌকো চালানোর কারণে ঘাবড়ে যাইনি, আমি স্বাভাবিক ছিলাম কারণ আমি সব সময় এই কাজটি করি, তাকে কেবল নৌকায় করে পারাপারে জন্য নিজেকে খুব আনন্দিত ও গর্বিত মনে করছি।
৪০ বছর বয়সী আলম থাকেন দুবাই ক্রিকের পাশ্ববর্তী এলাকা আল রাসে থাকেন। মাসে ১ হাজার দিরহাম বেতনের পাশাপাশি কমিশনে আবরা চালক হিসেবে কাজ করেন। সকাল ৬ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত। ২০০৬ সালে তিনি দুবাই আসেন, ১৩ বছরে চাকুরী জীবনে এর আগে কখনো কোন বিখ্যাত ব্যক্তি তার নৌকায় ভ্রমণ করেননি।
মোহাম্মদ আলমের দেশের বাড়ি কক্সবাজার জেলার উখিয়ায়, বাংলাদেশে তার স্ত্রী ও দশ বছর ও চার বছর বয়সী দুই বাচ্চা রয়েছে।