আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে বাংলাদেশের কোনো অনুমতি না নিয়েই ফেনী নদী থেকে পানি নিয়ে যাচ্ছে ভারত। সীমান্তের জিরো লাইনে পাম্প বসিয়ে নদীটি থেকে পানি উত্তোলন করছে দেশটি। পানি উত্তোলন না করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পানিসম্পদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুম শহরবাসীর খাবার পানি সরবরাহের জন্য ফেনী নদী থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি চেয়েছিল দেশটি। এর প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ এক বৈঠকে মানবিক দৃষ্টিকোণে ভারতকে পানি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে পানিসম্পদ সচিব পর্যায়ে এ বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত নাা হওয়ায় সে সিদ্ধান্ত ভারতকে আর জানায়নি বাংলাদেশ।
কিন্তু পরে বাংলাদেশের অনুমতি না নিয়েই পাম্পের মাধ্যমে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৩৫ থেকে ৪০ কিউসেক পানি নদী থেকে উত্তোলন করা শুরু করে ভারত। এর পর যৌথ নদী কমিশনের কারিগরি পর্যায়ের একাধিক বৈঠকে বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলন না করতে এবং সীমান্তের শূন্য লাইনে স্থাপনা অপসারণে ভারত কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে জানতে চাওয়া হয়। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত এলেই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়া হবে বলে জানায় ভারতের প্রতিনিধি দল।
সম্মতি না নিয়েও বাংলাদেশের নদী থেকে ভারতের এ পানি নেয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘২০১০ সালে ভারতকে পানি দেয়ার বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে সম্মত হই। কেউ খাবার পানি চাইবে, আমরা সেটি দেবে না? এমন অমানবিক বাংলাদেশ নয়। তবে সে সিদ্ধান্ত ভারতকে জানানোর সুযোগ হয়নি। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে চুক্তি এড়িয়ে চলতে পানিসম্পদ সচিব বা মন্ত্রিপর্যায়ে নির্ধারিত বৈঠকে বসেনি ভারত।’
বাংলাদেশের সম্মতিতে ভারত এ পানি উত্তোলন করলে ভালো হতো জানিয়ে তিনি বলেন, পানি উত্তোলন না করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনুরোধপত্র ভারতের সংশ্লিষ্ট জায়গায় পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশেই। কিন্তু ভারতের পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্চে, এ নদীর উৎপত্তি ত্রিপুরা রাজ্যে। অনুসন্ধান ও সরেজমিনে দেখা গেছে, এর উৎপত্তি মাটিরাঙ্গার ভগবানটিলায়। নদীর ১০৮ কিলোমিটারের কোনো অংশ ভারতের নয়।