সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ভুয়া লন্ডনি মেয়েকে বিয়ে করে একতার হোসেন লিটন নামে এক যুবক সর্বস্ব হারিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুয়া লন্ডনি মেয়ের নাম পারভীন আলী ওরফে লিপি বেগম। তিনি দিরাই উপজেলার গছিয়া গ্রামের আবদুস সোবহানের মেয়ে। আর একতার হোসেন লিটন জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের সাংগিয়ারগাঁও গ্রামের মৃত রইছ আলীর ছেলে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দিরাই উপজেলার গছিয়া গ্রামের ফারুক মিয়া তার স্ত্রী পারভীন আলী ওরফে লিপি বেগমকে ভিজিট ভিসায় লন্ডন নেন। সেখানে কিছুদিন থাকার পর ২০০৮ সালে লিপি বেগম দেশে ফিরে এসে নিজেকে ব্রিটিশ সিটিজেন বলে পরিচয় দেন।
এ সময় লন্ডন যাওয়ার লোভে লন্ডনি লিপি বেগমের প্রেমের জালে ধরা পড়েন লিটন। দীর্ঘদিনের প্রেমের পর আগের স্বামী ফারুক মিয়াকে তালাক দিয়ে কোর্টের মাধ্যমে লিটনকে বিয়ে করেন।
বিয়ের সময় লিপি বেগম লিটনের কাছে থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা নেন। বিয়ের কিছুদিন পর লিপি বেগম ভিজিটে লন্ডন গেলেও ব্রিটিশ সিটিজেন নন তা ফাঁস হয়ে যায়।
এ ঘটনা জানাজানির পরও সবকিছু মেনে নিয়ে সংসার শুরু করেন লিটন। দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর সংসার করেন তারা। এর মধ্যে বিভিন্ন অজুহাতে লিটনের কাছ থেকে আরও ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তার স্ত্রী লিপি বেগম বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
একপর্যায়ে টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এতে পূর্বে নেয়া ৫ লাখ টাকাসহ মোট ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার উত্তরা ব্যাংক জগন্নাথপুর শাখার একটি চেক লিপি বেগম তার স্বামী লিটনকে দেন।
কিন্তু উচ্চাভিলাষী লিপি বেগম আবারও তার বর্তমান স্বামীকে রেখে অন্য পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। একপর্যায়ে লিপি বেগমকে তালাক দেন লিটন।
পরে লিপি বেগমের দেয়া চেক দিয়ে ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় চেক ডিজঅনার মামলা করেন লিটন। এ মামলা দায়েরের পর চলতি ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট বিষয়টি আপোষে নিষ্পত্তির কথা বলে লিপি বেগম লিটনকে দিরাই ডেকে নিয়ে অন্য লোকজন দিয়ে মারধর করেন।
এ ছাড়াও একাধিকবার তার ওপর হামলা চালানো হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় লিটন বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে লিপি বেগমসহ ৬ জনকে আসামি করে গত সোমবার মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১০৯/২০১৯ইং।
এ বিষয়ে লিটন বলেন, চরিত্রহীন ওই মেয়ের ফাঁদে পড়ে আমি সর্বস্ব হারিয়েছি। বর্তমানে মামলা দায়েরের পর সে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে এবং আমাকে প্রাণনাশের জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এদিকে এ সব ব্যাপারে জানতে বারবার চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় অভিযুক্ত লিপি বেগমের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে এ সব বিষয়ে জগন্নাথপুর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মেয়েটা তাকে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার লিটন থানায় একটি জিডি করেছেন। আমরা তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।