রাজধানীর আশুলিয়া বাজার এলাকায় ডাকাতি ও হত্যার ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় র্যাব-১ এর একটি দল ঢাকার আশুলিয়া থানার আশুলিয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেফতার করে। এটি নিশ্চিত করেন র্যাব-১ এর এসপি সালাউদ্দিন রাব্বি।
এ চার জন হলো- আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য আমজাদ হোসেন (৪৫), বাবুল হোসেন (৪০), উজ্জ্বল মিয়া (২৬) ও আজমল (২৭)। তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও বেলুন জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা আশুলিয়ার ঘটনাটিসহ বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
র্যাব জানায়, ঈদের আগে গত ৭ আগস্ট নাটোর থেকে ঢাকায় কোরবানির পশু নিয়ে আসে একটি ব্যবসায়ী দল। ১০ আগস্ট পশু বিক্রি শেষে বাড়ি ফিরতে ঢাকার মেরুল বাড্ডা থেকে একটি ট্রাকে ওঠে তারা। ট্রাকে ওঠার কিছুক্ষণ পর গাড়িটিতে আগে থেকে অবস্থান করা একটি ডাকাত দল জোরপূর্বক ব্যবসায়ীদের মুখ ও হাত-পা বেঁধে লোহার হাতুড়ি দিয়ে পেটায় এবং তাদের কাছে থাকা পশু বিক্রির ১২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর ডাকাতরা ওই ব্যবসায়ীদের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তুরাগ থানাধীন আবদুল্লাপুর-আশুলিয়াগামী মহাসড়কের বেড়িবাঁধ এলাকায় চলন্ত ট্রাক থেকে ফেলে চলে যায়। ব্যবসায়ী মো. কলিম উদ্দিন ফকির (৫০) ডাকাত দলের ব্যাপক হাতুড়িপেটা এবং চলন্ত ট্রাক থেকে ফেলে দেওয়ায় গুরুতর আহত হন। তার সঙ্গীরা গুরুতর আহতাবস্থায় কলিম উদ্দিন ফকিরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীদের একজন বকুল আলী শেখ (২৩) বাদী হয়ে ১২ আগস্ট তুরাগ থানায় একটি ডাকাতি ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরপর এই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দিনের আলোতে নামমাত্র বিভিন্ন পেশায় থাকলেও সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই কুখ্যাত ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্যরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তারা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করে ডাকাতির উদ্দেশ্যে টার্গেট নির্ধারণ করে দলের অন্যদের খবর পাঠায়। সবশেষে পরিকল্পিতভাবে তারা ডাকাতির ছক আঁকে এবং কাজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়, নিজ নিজ অবস্থানে চলে যায়। ডাকাত দলের মধ্যে যার তথ্যের ভিত্তি করে অপকর্ম করা হয়, তাকে টাকা ভাগাভাগির সময় নির্দিষ্ট অংকের টাকা বেশি দেওয়া হয়।
আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়, টার্গেটের অবস্থান ও পরিস্থিতি বুঝে তারা অভিনব সব কৌশল অবলম্বন করে থাকে। তারা এতটাই হিংস্র যে, উদ্দেশ্য হাসিলে কাউকে হত্যা করতেও সামান্যতম দ্বিধাবোধ করে না তারা। এ চারজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান র্যাব-১ এর এসপি সালাউদ্দিন রাব্বি।
সৌজন্যে- অর্থসূচক