কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে ওয়ার্ক পারমিট ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজ দেখিয়ে চাকরি দেয়ার নামে টাকা আত্মসাতকারী প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
গ্রেফতাররা হলেন, বাপ্পী ইসলাম (৪৩), নিয়াজুল ইসলাম (৫৪), এন এ সাত্তার (৫৮), সাব্বির হাসান (২৪), রাসেল হাওলাদার (২৪), সোহরাব হোসেন সৌরভ (৩৮) ও মোহাইমিনুল ইসলাম(৩৫)।
বৃহস্পতিবার রাতে (২৯ আগস্ট) খিলক্ষেত থানাধীন রাজউক ট্রেড সেন্টারের সামনে দুজনকে আটকের পর তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের আটক করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি জাল USA আইডি কার্ড, বিভিন্ন লোকের নামে বাংলাদেশি পাসপোর্টের প্রথম পাতার ফটোকপি ৪৮ পাতা, বিদেশে কাজ ও হিসাবের খাতা একটি, Singapore Airlines (SQ) ৪৪৭ ও Thai Airwayes LTD এর বিমানের টিকেটের ফটোকপি দুটি, অত্র মামলার বাদীসহ অন্য দুই জনের NAFA মেডিকেল সেন্টারের মেডিকেল রিপোর্ট তিন পাতা, ইউকেতে জরুরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পত্র দুই পাতা, বাংলাদেশ জার্মান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার থেকে বিভিন্ন লোকের নামে বিভিন্ন দেশের টেনিং সার্টিফিকেট ২৫টি, USA Embssy Laborer card পাঁচটি। Laborer card korea ২৪টি, Laborer card Canada ১২টি, Laborer card Poland ৯টি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রামে USA Embassy, South korea Embassy বিভিন্ন দেশের নামে Emergeny Nootice ৭ পাতা, বাংলাদেশ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মূল ও ফটো কপি সাতটিসহ কম্পিউটার প্রিন্টার জব্দ করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, ২৮ আগস্ট দুপুরে জনৈক সোহেল মিয়া থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেন যে, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র কানাডায় পাঠানোর কথা বলে অর্থের বিনিময়ে তাকে জাল কানাডিয়া ওয়ার্ক পারমিট প্রদান এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন তারিখে তার কাছ থেকে নগদ চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সোহেল মিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে খিলক্ষেত থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়।
ওই মামলার প্রেক্ষিতে খিলক্ষেত থানার একটি দল বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে রাজউক ট্রেড সেন্টারের সামনে থেকে বাপ্পী ইসলাম ও নিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা হতে বাকিদের গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার বাপ্পী প্রতারক চক্রের প্রধান হিসেবে কাজ করে। নিয়াজুল বিদেশে লোক পাঠানো বিভিন্ন এজেন্সির সামনে অবস্থান করে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে কানাডা, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে বলে প্রলোভন দেয়। সেই সঙ্গে বলতে থাকে আমার বস (বাপ্পী) অ্যামেরিকান দূতাবাসে চাকরি করে। সে বিভিন্ন দেশে সহজে লোক পাঠাতে পারে। নিয়াজুলের প্রলোভনে কেউ রাজি হলে বিদেশে পাঠানোর নামে তাদের এক একজনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকারও অধিক নেয় তারা। তারা জালিয়াতি করে বিভিন্ন আইডি কার্ড, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, বিভিন্ন দেশের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ও মেডিকেল রিপোর্টসহ জাল কাগজপত্র তৈরি করে থাকে। এজন্য তারা বিদেশগামীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) গ্রেফতারকৃতদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান মাসুদুর রহমান।