দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আর কোন শান্তি আলোচনায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর কোরিয়া। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে জানানো হয়েছে তাদের এমন পদক্ষেপের জন্য পুরোপুরি দক্ষিণ কোরিয়াই দায়ী। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জ্যা ইন বক্তব্য দেয়ার পরেই উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১৫ আগস্ট স্বাধীনতার ৭৪ তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক ভাষণে মুন জ্যা ইন বলেন, ২০৪৫ সালের মধ্যেই দুই কোরিয়া আবারও ঐক্যবদ্ধ হবে। এমনটাই আশা প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জ্যা ইন। ২০৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শতবর্ষ পূর্ণ হবে। তবে মুন জ্যা ইনের এমন মন্তব্যের পর সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার বদলে উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করা হলো।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে পূর্ব উপকূলে আরও দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে পিয়ংইয়ং। গত এক মাসেরও কম সময়ে এ নিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হলো।
গত জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে কোরীয় দ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রিকরণের বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করতে দুই নেতা একমত হওয়ার পরেও একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ চলছে। নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ করায় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে উত্তর কোরিয়া।
বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ২০৩২ সালে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মিলে অলিম্পিক আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জ্যা ইন। ১৯১০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানের শাসনে ছিল কোরিয়া। এরপর ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা পায় তারা। যুদ্ধের সময় থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে তিক্ততা ছিল চরমে।
১৫ আগস্ট দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাধীনতার ৭৪ তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক ভাষণে মুন জ্যা ইন বলেন, জাপানের সঙ্গে চলতি বাণিজ্য সংঘাত মিটিয়ে নিতে আগ্রহী দক্ষিণ কোরিয়া। একই সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আবারও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আশাব্যক্ত করেন তিনি।
কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে এক বিবৃতিতে শান্তি আলোচনার বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। পিয়ংইয়ং বলছে, এমন সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিচ্ছে যখন তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এমন প্রস্তাব দেয়ার কোন অধিকার নেই।
শুধু তাই নয়। উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জ্যা ইনকে ‘নির্লজ্জ’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান যৌথ সামরিক মহড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির তরফ থেকে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের আর কোন কথা বলার নেই।