সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, আমি হাসব না কাঁদব, সেটাই ভাবছি। ঢাকায় বুধবার তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হওয়ার পরদিন ওই মামলা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ খবর জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়াভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ব্যানার নিউজ। মামলা সম্পর্কে এসকে সিনহা বলেন, এটি অনৈতিক, অন্যায়। তারা আমাকে জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়। আর এ কারণেই এই কাজ করা হয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত এসকে সিনহা গত কয়েক দিন ধরে নিজের ছোট মেয়েকে দেখতে স্ত্রীসহ কানাডায় রয়েছেন। দুর্নীতি মামলা হওয়ার সংবাদটি তার স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে তাকে জানান। তিনি বলেন, দুর্নীতির মামলা হওয়ায় আমি হাসব না কাঁদব, সেটাই ভাবছি! আপনার কি মনে হয় আপনি এই মামলায় ন্যায়বিচার পাবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে এসকে সিনহা বলেন, যখন আমি কর্মরত প্রধান বিচারপতি ছিলাম, তখনই ন্যায়বিচার পাইনি। তাহলে এখন কীভাবে আশা করব?
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে সরকারের সঙ্গে মতবিরোধ সৃষ্টি হয় এস কে সিনহার। এরই জের ধরে ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর প্রথমে ছুটি নিয়ে বিদেশ যান তিনি। পরে সেখান থেকেই রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। বাংলাদেশে সাবেক কোনো প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা এটাই প্রথম।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণ জালিয়াতি ও চার কোটি টাকা আত্মসাতে জড়িত থাকা ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এস কে সিনহা ছাড়া মামলার বাকি আসামিরা হলেন ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি একেএম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, একই এলাকার নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।
ফারমার্স ব্যাংকের দুটি একাউন্ট থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতির ‘প্রমাণ’ পাওয়ার কথা গতবছর অক্টোবরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে চার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছিলেন কথিত ব্যবসায়ী শাহজাহান ও নিরঞ্জন। সেই টাকা রনজিৎ চন্দ্র সাহার হাত ঘুরে বিচারপতি এস কে সিনহার বাড়ি বিক্রির টাকা হিসেবে দেখিয়ে তার ব্যাংক হিসাবে ঢুকেছে বলে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে দুদক