পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরপরই বিয়ে করেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। তার স্বামীর নাম নিখিল জৈন। গত মাসে বিয়ে হয় তুরস্কে। বিয়ের পর মাথায় সিঁদূর নিয়ে দেশে ফেরার পর মুসলিম এই অভিনেত্রীকে নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়। এবার সেই সমালোচনার জবাব দিলেন তিনি। গত ১৯ জুন সন্ধ্যায় তুরস্কের রোমান্টিক শহর হিসেবে পরিচিত বোদরুমের সিক্স সেন্সেস কাপলাঙ্কায়া রিসোর্টে অগ্নিসাক্ষী রেখে বিয়ে করেন নুসরাত ও নিখিল। পরদিন একই স্থানে খ্রিষ্টান রীতিতে বিয়ে হয় তাদের।
নুসরাতের বিয়ের পর এক আলেম বলেন, ‘নুসরাত আর কোনোভাবেই মুসলিম নেই। সে একজন জৈন ধর্মাবলম্বীকে বিয়ে করেছে এবং মাথায় সিঁদূর পড়েছে। যা হিন্দু মতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ ইসলামের প্রতি বিশ্বাস ছিল না তাই নুসরাত এমন কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভারতের জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘আপ কি আদালতে’ নুসরাতকে আলেমের এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মমতার বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে প্রথমবারের মতো এমপি হওয়া নুসরাত বলেন, ‘আমার ধর্ম এবং বিশ্বাস (ঈমান) কেড়ে নেয়ার অধিকার কারো নেই।’
নুসরাত জাহান আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘আমার সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই, তাই আমি মনে করি অন্যান্যদেরও প্রত্যক্ষ কোনো যোগাযোগ (আল্লাহর সাথে) নেই। ধর্ম হলো বিশ্বাসের ব্যাপার আর আমার বিশ্বাস পাক্কা। সিঁদূর এবং মঙ্গলসূত্র পরে আমি আমার বিশ্বাস হারাইনি।’
সম্প্রতি রথযাত্রার সময় ‘মঙ্গল আরতি’ সম্পন্ন হয়েছে নুসরাত জাহানের। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নুসরাতের দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাপধ্যায়। আর উপস্থিত ছিলেন টলিউডের আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং লোকসভার সদস্য মিমি চক্রবর্তীসহ অন্যান্যরা।
নুসরাত জাহান বলেন, ‘আমি একবার রথযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। তখন চারপাশে গুঞ্জন উঠেছিল আমি নাকি ধর্মান্তরিত হয়েছি। তখন আমি বিবাহিত ছিলাম না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমি এটা বিশ্বাস করি যে, ধর্ম মানুষের মন থেকে আসে, মস্তিষ্ক থেকে নয়।
তৃণমূল দলীয় ওই এমপি আরও বলেন, ‘ইসলাম আমার ধর্ম, যা আমি আমার বাবা এবং আমার পরিবার থেকে পেয়েছি। আমি হাদিস এবং পবিত্র কোরআন পড়েছি। আমার বাবা আমাকে শিখিয়েছেন, ধর্ম আসে মানুষের মন থেকে।’