স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘গত ১০ বছরে সীমান্তে ২৯৪ বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।’ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) জাতীয় সংসদে বিএনপির মো. হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সংসদে দেয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ সালে ২৪, ২০১২ সালে ২৪, ২০১৩ সালে ১৮, ২০১৪ সালে ২৪, ২০১৫ সালে ৩৮, ২০১৬ সালে ২৫, ২০১৭ সালে ১৭ জন ও ২০১৮ সালে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে।
অসীম কুমার উকিলের (নেত্রকোনা-৩) তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা/আহত/আটক ইত্যাদি নিয়ে প্রতিনিয়ত বিজিবি এবং বিএসএফের বিভিন্ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। এসব পতাকা বৈঠকে সীমান্তের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি সরকার ও কূটনৈতিক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়। সম্প্রতি সীমান্ত এলাকার জনগণের মধ্যে এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কনফিডেন্স বিল্ডিংয়ে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, যা সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হবে বলে বিশ্বাস। এছাড়া দিনে-রাতে সীমান্ত এলাকা নজরদারিতে রাখার জন্য বিজিবি ইউনিটগুলো নিয়মিত টহল দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় বিজিবি এবং বিএসএফের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সে সব স্থান সমন্বিত টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। বিওপি থেকে পার্শ্ববর্তী বিওপির মধ্যবর্তী দূরত্ব কমানোর জন্য ১২৮টি পোস্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বিজিবি কর্তৃক সীমান্ত এলাকায় সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপনের জন্য ৩২৮ কিলোমিটার স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় আধুনিক ক্যামেরাসহ সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপন করা হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশিরা যাতে শূন্য লাইন অতিক্রম না করতে পারে সে ব্যাপারে সীমান্তবর্তী এলাকায় চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সীমান্তে বসবাসরত জনসাধারণের মাঝে নিয়মিত প্রেষণা প্রদান করে আসছে বিজিবি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সীমান্তে ২০১৭ সালে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার সংখ্যা ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে হত্যার সংখ্যা তিন, যা আগের বছরের তুলনায় অনেকটা কমে এসেছে বলে প্রতীয়মান। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিকদের হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং সরকার এ ব্যাপারে কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সীমান্ত হত্যাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে বিজিবি সার্বিক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।