ব্রিটেনে কর্মক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক বর্ণবৈষম্য। সেখানে ব্রিটিশদের তুলনায় অন্য দেশ বা জাতির নাগরিকরা অনেক কম বেতন পান। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। প্রথমবারের মতো দেশটির সরকারের প্রকাশ করা জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, এই বৈষম্য লন্ডন শহরে সবচেয়ে বেশি। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (ওএনএস) এই জরিপ প্রকাশ করেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের বাইরে জন্মগ্রহণ করা নাগরিকরা ব্রিটিশ কর্মীদের চেয়ে কম বেতন পেয়ে আসছেন। একই সময় ধরে কাজ করে শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের তুলনায় বাংলাদেশি বা পাকিস্তানিরা ২০ দশমিক ১ শতাংশ কম বেতন পাচ্ছেন। এই পার্থক্য লন্ডনে সবচেয়ে বেশি। সেখানে স্থানীয় শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে অন্যদের বেতনের পার্থক্য ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর একজন ব্রিটিশ কর্মী এক ঘণ্টায় গড়ে ১২ দশমিক ০৩ পাউন্ড মজুরি পেয়েছেন। সেখানে একজন বাংলাদেশি পেয়েছেন ৯ দশমিক ৬০ পাউন্ড। অপরদিকে পাকিস্তানিরা পেয়েছেন ১০ পাউন্ড করে। শুধু তাই নয়, এই দুই দেশের নাগরিকদের কাজ পাওয়ার হারও কম।
বর্তমানে ব্রিটেনে যাওয়া বাংলাদেশিদের ৫৪ দশমিক ৯ শতাংশ কাজ পাচ্ছেন। পাকিস্তানিদের ক্ষেত্রে এই হার ৫৮ দশমিক ২ শতাংশ। এর আগে রেজুলেশন ফাউন্ডেশন জানিয়েছিল, গত বছর ব্রিটেনে অবস্থানরত মোট ১৯ লাখ কৃষ্ণাঙ্গ, ভারতীয়, পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি কর্মীরা ৩২০ কোটি পাউন্ড জরিমানা দিয়েছেন।
গবেষক ক্যাথেলিন হেনেহান জানান, গত এক দশকে ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ এবং অন্য জাতির নাগরিকদের পড়ালেখা ও কর্মসংস্থানের হার বেড়েছে। কিন্তু বেতন বৈষম্য রয়ে গেছে। সরকারের উচিত এখনই এদিকে নজর দেয়া।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই বৈষম্য সবার ক্ষেত্রে একরকম নয়। চীনা বা ভারতীয় কর্মীরা ব্রিটিশদের কাছাকাছি বেতন পাচ্ছেন। অন্য দেশের তরুণরাও এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। যেমন ১৬-৩০ বছর বয়সী বাংলাদেশিদের সঙ্গে ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গদের বেতনের হারে পার্থক্য ৩ দশমিক ১ শতাংশ। ৩০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার ২৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ওএনএস বলছে, এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীরা তুলনামূলক ভালো পারফরম্যান্স করছে।