সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের জাতিগত ধর্মীয় সত্ত্বা মুছে ফেলতে সম্ভাব্য সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে চীন। দেশটির নির্বাসিত উইঘুর মানবাধিকার কর্মীরা এই অভিযোগ করেছেন। জিনজিয়াংয়ের উরুমকি দাঙ্গার দশ বছর পূর্তির দিনে গত শুক্রবার ইস্ট তুর্কিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রধান সৈয়দ তুমতুর্ক বলেন, ইস্ট তুর্কিস্তানে নাৎসি আমলের শিবিরের ন্যায় আটক কেন্দ্রে লাখ লাখ উইঘুরকে বন্দি করে রেখেছে চীন।
২০০৯ সালের ৫ জুলাই চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকদিনের সহিংসতায় জিনজিয়াংয়ে কয়েক ডজন মানুষের প্রাণহানি ঘটে। গ্রেফতার করা হয় শত শত উইঘুর মুসলিমকে।
তুমতুর্ক বলেন, চীন উইঘুরদের পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। উইঘুরদের নিজস্ব বর্ণমালা নিষিদ্ধ করে, মসজিদ গুড়িয়ে দিয়ে ও তাদের ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে চীন এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি মুছে ফেলছে।
“আমাদের ছেলেদের নির্যাতন করা হচ্ছে, মেয়েদের জোরপূর্বক হ্যান চাইনিজদের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিশুদের পরিবার থেকে আলাদা করে এতিমখানায় পাঠানো হচ্ছে। এর একমাত্র কারণ তারা তুর্কি মুসলিম।” জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ সত্ত্বেও চীন দীর্ঘদিন ধরে উইঘুর মুসলিমদের আটকে রেখে নিপীড়ন চালিয়ে আসছে।
জিনজিয়াংয়ে অন্তত এক কোটি সংখ্যালঘু উইঘুরের বসবাস। এর মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ তুর্ক মুসলিম। এই প্রদেশে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় নিপীড়ন এবং বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এই মুসলিমরা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চীন সরকারের বিরুদ্ধে জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনে পদ্ধতিগত অভিযান পরিচালনার অভিযোগ আনে।