বিশ্বকাপ শুরুর আগে বড় স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব, আশা ব্যক্ত করেছিলেন বিশ্বের বড় দলগুলোকে কাঁপিয়ে দেয়ার। কিন্তু খেলার মাঠে কথার প্রতিফলন দেখা গেলো খুব অল্পই, মেলেনি নিজেদের প্রত্যাশাও।
কেননা বিশ্বকাপের পুরো আসরে একটি জয়ও যে পায়নি আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। টানা নয়টি ম্যাচের সবকয়টিতে হেরেই বাড়ি ফিরছেন রশিদ খান, মোহাম্মদ নবীরা। শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সান্ত্বনার জয়টিও পায়নি তারা।
দুই দলেরই বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়ে গেছিল আগেই। তাই ম্যাচটি ছিলো পুরোটাই নিয়মরক্ষার। এমন ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষটা ভালো করতে পেরেছে ক্যারিবীয়রা। তাদের করা ৩১১ রানের জবাবে ২৮৮ রানে অলআউট হয়েছে আফগানিস্তান।
৩১২ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান আফগান অধিনায়ক নাইব। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইকরাম আলি খিল ও রহমত শাহ।
বিশ্বকাপের তৃতীয় কণিষ্ঠতম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিফটি করেন ইকরাম। পরে তিনি গড়েন বিশ্বকাপের কনিষ্ঠতম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮০+ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ডও। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও তিনি ক্রিস গেইলের ওভারে ধরা পড়েন লেগ বিফোরের ফাঁদে।
আউট হওয়ার আগে ৮ চারের মারে ৯৩ বলে ৮৬ রান করেন ইকরাম। তার আগেই অবশ্য ৬২ রান করে সাজঘরে ফিরে যান রহমত শাহ। এরপর নাজিবউল্লাহ জাদরান ৩১ ও আসগর আফগান ৪০ রান করলে পরাজয়ের ব্যবধানটাই স্রেফ কমাতে পারে আফগানিস্তান।
শেষদিকে খানিক চেষ্টা করেন রশিদ খান। তবে জীবন পেয়েও বেশি কিছু করতে পারেননি তিনি। আউট হয়ে যান ১৬ বলে ৯ রান করে। তবে শিরজাদ আহমেদ খেলেন ১৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস। শেষপর্যন্ত আফগানিস্তান নির্ধারত ৫০ ওভার সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ২৮৮ রান করতে সক্ষম হয়।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ধীরে করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৩ বলে ক্রিস গেইল আর এভিন লুইসের ওপেনিং জুটি থেকে আসে মাত্র ২১ রান। ১৮ বল খেলে ৭ রান করেই সাজঘরে ফেরেন গেইল।
তবে দ্বিতীয় উইকেটে শাই হোপের সঙ্গে ৮৮ রানের জুটি গড়ে সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠেন লুইস। ক্যারিবীয় এই ওপেনার পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরিও। তবে ৭৮ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৫৮ রান করার রশিদ খানের শিকার হতে হয়েছে তাকে।
উইকেটে এসেই ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন সিমরন হেটমায়ার। মারকুটে ব্যাটিংই করে যাচ্ছিলেন। ৩১ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩৯ রানে পৌঁছে যাওয়া এই ব্যাটসম্যানকে থামান দৌলত জাদরান।
এরপর ক্যারিবীয় ইনিংসের আরেক হাফসেঞ্চুরিয়ান শাই হোপকে রশিদের ক্যাচ বানান নবী। ৯২ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় হোপ করেন ৭৭ রান। ১৯২ রানে ৪ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে ৬৯ বলে ১০৫ রানের বিধ্বংসী এক জুটি গড়েন জেসন হোল্ডার আর নিকোলাস পুরান। ইনিংসের ৫ বল বাকি থাকতে একাই দৌড় দিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান পুরান। ৪৩ বলে ৫ চার আর ১ ছক্কায় তিনি করেন ৫৮ রান। শাইদ শিরজাদের পরের বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হন ৩৪ বলে ৪৫ করা হোল্ডারও। তারপরও ক্যারিবীয়দের তিনশো পেরুতে কষ্ট হয়নি।
আফগানিস্তানের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল দৌলত জাদরান। তবে ২ উইকেট নিলেও তিনি ৯ ওভারেই খরচ করেন ৭৩ রান। ১০ ওভারে রশিদ খান ৫২ রানে নেন ১টি উইকেট।