ভারত থেকে আনা নতুন বাসের ছাদ ফুটো হয়েছে। যার ফলে বৃষ্টি হলেই ফুটো দিয়ে ঝর্ণার মত পানি পড়ছে। আর এই পানি পড়ার ফলে বাসের সিটও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাত্র কয়েক মাস হলো বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ভারত থেকে বাস গুলো আমদানি করে নিজ বহরে যুক্ত করে। যদিও বাসগুলোর মান ঠিক আছে কিনা তা দেখতে বিআরটিসি চেয়ারম্যানসহ অনেক কর্মকর্তা একাধিকবার ভারতে গিয়েছিলেন। এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সারাবাংলা।
সম্প্রতি গাবতলী বাস ডিপোতে বিআরটিসি’র একতলা বাসে ছাদ ফুটো হওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে। ১০ মে ওই ডিপোতে বরাদ্দ দেয়া ৮টি বাসের সবকয়টিতেই একই অবস্থা দেখা গেছে। ভারতীয় টাটা কোম্পানির কাছ থেকে এরকম ১০০টি বাস কিনেছে বিআরটিসি।
গাবতলী বাস ডিপোর ম্যানেজার মো: মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বৃষ্টির পানি ছাদের ফুটো দিয়ে সিটে গড়িয়ে পড়ার বিষয়টি বিআরটিসি চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে আর কিছু জানাননি।
চেয়ারম্যানের কাছে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়, বাসগুলোতে বৃষ্টির সময় ভেতরে পানি পড়ছিলো। এরপর তারা খুঁজে দেখেন বাসের ছাদ ফুটো হয়ে গেছে। বাসের ছাদে যে এমএস শিট লাগানো হয়েছে তা অতিমাত্রায় পাতলা হওয়ার কারণে শিট ছিঁড়ে গেছে। যে কারণে সিলিং বেয়ে পানি পড়ছে। একতলা বাসের আরো ত্রুটি ধরেছে ডিপোর কারিগরি শাখা। তারা (কারিগরি শাখা) বলছে, “বাসে ‘এমএস শিট’ আর ‘রিভিট’ যথাযথভাবে লাগানো হয়নি। এগুলো আলাদা রয়ে গেছে। যে কারণে বাস চলার সময় বিকট শব্দ করছে।”
যদিও বা বাসের মান ঠিক হলো কিনা এবং যে ‘স্পেসিফিকেশন’ বাংলাদেশ যেমন চেয়েছে তেমন হয়েছে কিনা সেসব দেখতে বাস কিনে আনার আগে বিআরটিস ‘র চেয়ারম্যানসহ বহু কর্মকর্তাও ভারতে গিয়েছিলেন স্পেসিফিকেশন এবং প্রি ইন্সপেকশনে।
এতো তদারকির পরেও কেনো এমন হলো প্রশ্ন করা হলে বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুঁইয়া বলেন, ‘একতলা গাড়িগুলোর ইঞ্জিন টাটার এবং বডি নির্মাণ করেছে এসিজিএল কোম্পানি। দুই বছরের ভেতরে যা সমস্যা হবে তা তারা দেখবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। ছাদ ফুটো হয়ে পানির পড়ার ঘটনায় টাটা কোম্পানিকে ডাকা হয়েছে। তারা আসবে।’
স্পেসিফিকেশন অনুসারে কেনো বাস দেয়া হলো না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বডি শিটের থিকনেস তারা কম দিয়েছে। তবে থিকনেস কম হলেও এটার ওয়ারেন্টি ভালো।’এসময় মানের দিক থেকে খারাপ বাস দেয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, বাসের সিটের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত চাহিদা অনুযায়ী সিট দেয়নি ভারত। এতেও চুক্তি অনুযায়ী স্পেসিফিকেশন মানা হয়নি। এ বিষয়টিও স্বীকার করেন বিআরটিসি চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিআরটিসি দেখভালের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম সচিব ড. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। বিআরটিসির সঙ্গে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’