শুরুটা যেভাবে করেছিলেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারেস্ট এবং জেসন রয়, মাঝে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। কিন্তু শেষ দিকে এসে বেন স্টোকস আবার ঝড় তোলেন। তার এই এক ঝড়েই রান ৩০০ তো পার হলোই, ভারতের সামনে ৩৩৮ রানের বিশাল এক লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে দিলো ইংল্যান্ড।
বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে দারুণ ব্যাটিং করেছে ইংল্যান্ড। অসাধারণ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ওপেনার জনি বেয়ারেস্ট। বেন স্টোকসের ব্যাট তো ছিল যেন খোলা তরবারি। ৫৪ বলে ৭৯ রান করে আউট হন তিনি। হাফসেঞ্চুরি করেছেন জেসন রয়ও। জো রুট গিয়েছিলেন হাফসেঞ্চুরি পর্যন্ত।
ভারতীয় বোলার মোহাম্মদ শামি, যাকে সুযোগই দেয়া হচ্ছিল না ভুবনেশ্বর কুমারের জন্য। অথচ সুযোগ পেয়ে তিন ম্যাচ খেলেই তিনি তুলে নিলেন মোট ১৩ উইকেট। টানা তিন ম্যাচ ৪টি কিংবা তারও বেশি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ নিলেন ৫ উইকেট।
আগের দুই ম্যাচে টানা হারের কারণে ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনাটাই বলতে গেলে থমকে গিয়েছিল। শেষ দুই ম্যাচে কঠিন প্রতিপক্ষ হওয়ার কারণে ইংলিশদের শেষটাই দেখে ফেলেছেন অনেকে। কিন্তু এজবাস্টনে আজ বিরাট কোহলিদের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের সূচনা দেখে মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপটা তাদের জন্যই।
দুই ওপেনার মিলেই যেভাবে ব্যাট করে যাচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল রান নিশ্চিত ৩৫০ পেরিয়ে যাবে। মাত্র ১৫.৩ ওভারেই (৯৩ বল) দলীয় ১০০ রান পূরণ করেন বেয়ারেস্ট এবং জেসন রয়। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের রান গিয়ে থামে সাড়ে তিনশ’র কাছাকাছি, ৭ উইকেটে ৩৩৭ রানে।
শুরুতে দুই ওপেনারের ব্যাটে যেন টর্নেডো বয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় বোলারদের ওপর। মাত্র ২২ ওভারেই ১৬০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় এবং জনি বেয়ারেস্ট। একের পর এক বোলার ব্যবহার করেও এই জুটি ভাঙতে পারছিলেন না ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
২৩তম ওভারের প্রথম বলে গিয়ে শেষ পর্যন্ত জুটি ভাঙতে পারলেন কুলদিপ যাদব। তবে এ ক্ষেত্রে বোলার কুলদিপের চেয়ে ফিল্ডার রবীন্দ্র জাদেজার কৃতিত্বই সবচেয়ে বেশি। দুর্দান্ত এক ডাইভ দিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করে নেন জাদেজা। ৫৭ বলে ৬৬ রান করে ফিরে যান জেসন রয়। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
রয় আউট হয়ে গেলেও অন্য প্রান্তে ঠিকই নিজের তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছেন অপর ওপেনার জনি বেয়ারেস্ট। ভারতীয় বোলারদের চারদিকে পিটিয়ে ৯০ বলেই পূরণ করে ফেলেন নিজের ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরি। ৮ বাউন্ডারি এবং ৪ ছক্কায় তিনি সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান।
তবে সেঞ্চুরি করার পর খুব বেশিদুর এগুতে পারলেন না। নিজের ১১১ রানের মাথায় মোহাম্মদ শামির বলে রিশাভ পান্তের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বেয়ারেস্ট। ১০৯ বলে খেলা ইনিংসটি সাজানো ছিল তার ১০ বাউন্ডারি এবং ৬ ছক্কায়। অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান তো দাঁড়াতেই পারেননি। ৯ বল খেলে মাত্র ১ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। মোহাম্মদ শামির বলে কেদার যাদবের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপরই জো রুট আর বেন স্টোকস মিলে জুটি গড়েন ৭০ রানের। ৫৪ বলে জো রুট আউট হওয়ার আগে করেন ৪৪ রান। মোহাম্মদ শামির বলে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জো রুট। এরপর জস বাটলার জুটি বাধেন স্টোকসের সঙ্গে এবং এই জুটিতে রান ওঠে ৩৩ টি। ৮ বলে ২০ রান করে আউট হয়ে যান বাটলার।
শেষ দিকে ক্রিস ওকস ৭ রান করে এবং শেষ পর্যন্ত ৫৪ বলে ৭৯ রান করে আউট হন স্টোকস। তার ইনিংস সাজানো ছিল ৬ বাউন্ডারি এবং ৩ ছক্কায়। মোহাম্মদ শামি ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন জসপ্রিত বুমরাহ এবং কুলদিপ যাদব।