যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোরীয় দ্বীপের চিরবৈরী প্রতিদ্বন্দ্বী উত্তর কোরিয়ার ভেতরে প্রবেশ করে ইতিহাস তৈরি করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই কোরিয়ার সীমান্তের অসামরিক এলাকা (ডিএমজেড) পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ার ভেতরে প্রায় ২০ কদম হেঁটে এ ইতিহাস গড়লেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট।
রোববার কোরীয় সীমান্তে গিয়ে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে করমর্দনের পর দেশটির ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকা প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটি স্পর্শ করার রেকর্ড গড়লেন ট্রাম্প।
কিম জং উনের সঙ্গে যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, সীমান্ত পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়াটা ছিল অনেক সম্মানের। এটা বিশ্বের জন্য একটি মহান দিন। আমরা এক মহৎ সম্পর্ক তৈরি করেছি; আমি মনে করি, আপনারা যদি আড়াই বছর আগে ফিরে যান, তাহলে দেখতে পাবেন আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে পরিস্থিতি কেমন ছিল। সেই সময় খুব, খুব খারাপ পরিস্থিতি ছিল, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং বিশ্বের জন্যও একটি ভয়াবহ বিপজ্জনক পরিস্থিতি ছিল।
কিমকে উদ্দেশ্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমার ধারণা আমাদের এই সম্পর্কের অর্থ অনেক মানুষের কাছে অনেক ধরনের। আপনার (কিমের) সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়াটা অনেক সম্মানের। তবে এটা আরো বেশি সম্মানের যে, আপনি সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশের আহ্বান জানিয়েছেন আমাকে। এই সীমান্ত পার হতে পেরে আমি অনেক গর্বিত।’
জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলন শেষে শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজধানী সিউলে পৌঁছান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সম্মেলন শেষে হঠাৎ করেই উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কি জং উনের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তাব দেন তিনি। পরে দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুনের সহায়তায় দুই কোরিয়ার অসামিরক এলাকায় সাক্ষাতে রাজি হন কিম জং উন।
কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে ট্রাম্পের পা রাখাকে বড় ধরণের কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। ১৯৫০-৫৩ সালে মিত্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যে সীমারেখায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে দাঁড়িয়ে উনের সঙ্গে করমর্দন করেছেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় দফায় করমর্দনের আগে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার সীমান্তের ভেতরে কয়েক কদম হেঁটে আবার ফিরে আসেন। এর আগে উন ও ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তের ভেতরে দাঁড়ান এবং ছবি তোলার সুযোগ করে দেন।
দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী অসামরিকৃত এলাকায় উনের সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই সীমারেখায় পা দিতে পেরে আমি গর্বিত। এটা বিশ্বের জন্য অনেক বড় একটি দিন এবং এখানে আসা আমার জন্য সম্মানের। অনেক বড় বড় জিনিস ঘটছে।’ তিনি বলেন, ‘এটা অনেক সম্মানের। অনেক উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে এটা মহান বন্ধুত্ত্ব।’ এর জবাবে কিম জং উন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি এটা দুর্ভাগ্যজনক অতীত মুছে ফেলার এবং নতুন ভবিষ্যতের স্বদিচ্ছা।’
https://www.facebook.com/FoxNews/videos/856201001423583/