জন্ম থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মিয়ানমারের হোসেন মুহাম্মদ তাহির। এ কারণে ছেলেটির বাবা মুহাম্মদ তাহিরের অন্তরে সন্তানের জন্য দুঃখবোধ কাজ করতো। ৫ বছরের এ জন্মান্ধ শিশুটিই রেডিও শুনে শুনেই মুখস্ত করে নেন পুরো কুরআন।
মিয়ানমারে জন্ম নেয়া জন্মান্ধ ৫ বছরের শিশু হোসেন রেডিও শুনে মুখস্ত করলেন পুরো কুরআন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৫ বছরের শিশুর কুরআন হেফজ এক বিরল দৃষ্টান্ত। সৌদি আরবে বসবাসকারী শিশু হোসেন যেভাবে পুরো কুরআন মুখস্ত করলেন তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিলেন তার বাবা মুহাম্মদ তাহির।
মিয়ানমারে জন্ম নেয়া হোসেন মুহাম্মদ তাহির সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থানকারী তার প্রবাসী বাবা মুহাম্মদ তাহিরের কাছে চলে আসে। সে আলোকে বাবা মুহাম্মদ তাহির তার ছেলেকে একটি রেডিও কিনে দেন এবং ২৪ ঘণ্টা কুরআন তেলাওয়াতের একটি চ্যানেল নির্ধারণ করে দেন। বাবা মুহাম্মদ তাহির চিন্তাও করেননি যে, তার দৃষ্টিহীন ছেলে শিশু হোসেন রেডিও শুনে শুনেই পুরো কুরআন মুখস্ত করবেন।
যেভাবে প্রকাশ পায় হোসেন মুখস্ত করেছে পুরো কুরআন: তখনও এ কথা অজানা যে, শিশু হোসেন রেডিও শুনে শুনে পুরো কুরআন মুখস্ত করেছেন। বাবা মুহাম্মদ তাহির জেদ্দা থেকে মদিনায় গমন করেন। মদিনায় আসার পর শিশু হোসেন মসজিদে নববিতে যাওয়ার জন্য বাবার কাছে আবদার করে।
তখন বাবা মুহাম্মদ তাহির অনেকটা মজা করেই তার ছেলেকে বলেন, তুমি যদি সুরা বাকারা থেকে কয়েকটি আয়াত মুখস্ত বলতে পারো তাহলে তোমাকে মসজিদে নববিতে নিয়ে যাবে।বাবার কথা শুনে ছেলে হোসেন কুরআনের সবচেয়ে বড় ও ২৮৬ আয়াতে পুরো সুরা বাকারা শুনিয়ে দেন। তখনই বাবা মুহাম্মদ তাহির জানতে পারেন যে, তার ছেলে রেডিও শুনে শুনেই কুরআন হেফজ করে যাচ্ছেন।
বিস্ময় বালক হোসেনকে নিয়ে বাবা মুহাম্মদ তাহির মদিনার কয়েক জন আলেম ও হাফেজের কাছে যান। তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন যে, শিশু হোসেনের তেলাওয়াত যেমন শুদ্ধ তেমনি সে ধীরে ধীরে কুরআন হেফজ সম্পন্নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আলেম ও হাফেজরা শিশু হোসেনকে কুরআন মুখস্ত করার কিছু পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। আলেম ও হাফেজদের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী শিশু হোসেন অল্প কিছু দিনের মধ্যেই পুরো কুরআন হেফজ সম্পন্ন করেন।
বিস্ময় বালক শিশু হোসেনের এ কৃতিত্ব বাবা মুহাম্মদ তাহির সব মনঃকষ্ট দূর করে দেয়। জন্মান্ধ শিশু হোসেনই এখন বাবা মুহাম্মদ তাহিরের গর্ব। আল্লাহ তাআলা শিশু হোসেনকে কুরআনের খাদেম হিসেবে কবুল করুন। আমিন।