নির্মাণের এক সপ্তাহ না যেতেই রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের গজালিয়া ফকিরটিলা সড়কের কুরমাই খালের সেতুটি ধসে গেছে। ধসে যাওয়া সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সেতুটির এ দশা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
লালানগর ইউনিয়নের ফকিরটিলা, গজালিয়া, ফুইট্টাগোদা, ছনখোলাবিল, মোল্লাপাড়া, আকবরসিকদারপাড়া, ওয়াহেদের পাড়া, সামসেরপাড়া, আলমশাহপাড়া ও পার্শ্ববর্তী হোসনাবাদ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুরসহ ১৫ গ্রামের মানুষের ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা এবং জেলা সদরে যোগাযোগের জন্য গজালিয়া-ফকিরটিলা সড়কের একটি সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। পরে লালানগর ইউনিয়ন পরিষদ কুরমাই খালের উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প পাস করে।
প্রকল্পটি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) প্রাক্কলনে বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা উন্নয়ন তহবিল থেকে ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়; কিন্তু ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কুরমাই খালের উপর তিনটি পিলার নির্মাণ করে অসম্পূর্ণ অবস্থায় রেখে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। নিরুপায় হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা পিলারের উপর বাঁশ বিছিয়ে সাঁকো তৈরি করে খাল পারাপার হচ্ছিল।
উপজেলা প্রকৌশলী দিদারুল আলম জানান, অপর্যাপ্ত বরাদ্দের কারণে সেতু নির্মাণ প্রকল্প অর্ধ সমাপ্ত থাকে। এ বিষয়ে গত ২৮ মে ‘রাঙ্গুনিয়ায় অর্ধনির্মিত সেতু, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা ঘোচেনি ১৫ গ্রামের মানুষের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রকাশিত সংবাদ নজরে এলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান সেতুটি সম্পূর্ণ করার ব্যবস্থা নেন। আরো একলাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেন। চেয়ারম্যানের উদ্যোগে গত ১৩ জুন পিলারের উপর স্ল্যাব নির্মাণে সেতু প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হয়; কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে স্ল্যাবে ফাটল দেখা দেয় এবং পিলার দেবে যায়।
ইউপি চেয়ারম্যান মীর তৌহিদুল ইসলাম জানান, পিলারের ওপর আরসিসি স্ল্যাব নির্মাণে সেতুর ঢালাই কাজ করার পরবর্তীতে বৃষ্টি হওয়ায় খালে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ধারক খুঁটি সরে গেলে সেতু ধসে যায় এবং ফেটে নষ্ট হয়ে যায়। সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান সেতু ধসে যাওয়ার ব্যাপারে অবগত নন বলে জানান। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি। লালানগর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সিরাজুল অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন পর দুই ধাপে ক্ষুদ্র সেতুটি নির্মাণ করা হলেও এর প্রাক্কলন ত্রুটি এবং কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছিল।
উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, ফাটল দেখা দেওয়ায় সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এটি ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা হবে।
সৌজন্যে- দৈনিক ইত্তেফাক