বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডকেই ভাবা হচ্ছিলো এবারের আসরের শিরোপার সবচেয়ে বড় দাবিদার। টুর্নামেন্টের শুরুটাও তারা করেছিলো সেভাবেই। উদ্বোধনী ম্যাচে প্রোটিয়াদের ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে আসর শুরু করে তারা; কিন্তু পরের ম্যাচে ১৪ রানে হেরে যায় আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তানের কাছে। অনেকেই তখন এটাকে অঘটন হিসেবেই ধরে নিয়েছিলো।
পরের তিন ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানের জয়ে ওই ম্যাচ যে অঘটন ছিলো সেটাও প্রমাণও করে দিয়েছিলো ইংলিশরা; কিন্তু শুক্রবার ইংল্যান্ড আবারও প্রমাণ করলো, পাকিস্তানের কাছে হার কোনো অঘটন নয়। শ্রীলংকার গড়া ২৩২ রানের মামুলি লক্ষ্যও তারা টপকাতে পারেনি।
বরং, লঙ্কানদের কাছে ২০ রানে হার এলোমেলো করে দিয়েছে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো দূরে থাক, এখন ইংল্যান্ডের জন্য এখন কঠিন হয়ে পড়েছে সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চত করাই।
সেমিফাইনালে যেতে হলে বিশ্বকাপে তাদের বাকি তিন ম্যাচের অন্তত দুটিতে জয় পেতে হবে। আর তিন ম্যাচ জিতলে তো কথাই নেই, নিশ্চিত সেমিফাইনালে উঠে যাবে তারা।
কিন্তু ইতিহাস ইংলিশদের জন্য ভালো বার্তা উপহার দিচ্ছে না। বাকি থাকা তিন ম্যাচে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে এবং ভারত। এই তিন দলের বিপক্ষে যে বিশ্বকাপে ২৭ বছর ধরে কোনো জয়ের দেখা পায়নি ইংল্যান্ড!
সর্বশেষ ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫৫ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয় পেয়েছিল ইংলিশরা। এই তিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে এটাই ইংলিশদের সর্বশেষ জয়।
এরপর আর বিশ্বকাপে কখনো এই তিন দলের বিপক্ষে জিততে পারেনি তারা। সেমিফাইনাল খেলার পথে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বাধা এখন বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের বাকি তিন ম্যাচেই যদি হেরে যায় ইংল্যান্ড তাহলে বাংলাদেশের জন্য সেমিফাইনাল খেলার পথ সহজ হয়ে যাবে।
৬ ম্যাচ থেকে তিন জয় নিয়ে বর্তমানে ৮ পয়েন্ট ইংল্যান্ডের। যদি তারা বাকি তিন ম্যাচের সবগুলোতেই হেরে যায় তাহলে তাদের পয়েন্ট আটকে থাকবে আটেই। অন্যদিকে ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন পাঁচ। বাংলাদেশের বাকি তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারত। তার মধ্যে দুই ম্যাচ জিতলেই বাংলাদেশের পয়েন্ট হয়ে যাবে নয়।
গত ২৭ বছরে নিউজিল্যান্ড-ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে মোট ৯ ম্যাচে জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে ১৬ রানে তারা হেরে যায় নিউজিল্যান্ডের কাছে।
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হেরে যায় ৬৩ রানে। এরপর ২০০৩ সালের বিশ্বকাপেও ভারতের মুখোমুখি হয়ে ৮২ রানে এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২ উইকেটে হারে তারা।
এরপর ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬ উইকেটে হেরে যায় ইংলিশরা। একই বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল ৭ উইকেটে। ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের ৩৩৭ রান তাড়া করেও জিততে পারেনি। স্কোর সমান হওয়ায় ম্যাচ হয়ে যায় টাই। সর্বশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১১১ রান ও নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটের ব্যবধানে হেরে যায় ইংল্যান্ড।