মনে হতে পারে কোনো বিদেশি গাড়ি। নামিদামি ব্রান্ডের প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত গাড়িটি হয়তো বাংলাদেশের কেউ কিনে এনেছে। কিন্ত আসলে তা নয়, অত্যাধুনিক নকশার গাড়িটি তৈরি করেছেন আকাশ নামের এক বাংলাদেশি যুবক। আকাশ আহমেদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। বাবার নাম মো. নবী হোসেন। অটোরিকশা ওয়ার্কশপে ‘ল্যাম্বোরগিনির’ আদলে তার তৈরিকৃত গাড়িটি ৪৫ কিলোমিটার বেগে প্রায় ১০ ঘণ্টা চলতে সক্ষম।
আকাশ জানান, ইতালির বিখ্যাত গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ল্যাম্বোরগিনি গাড়ির মডেল অনুসরণ করে গাড়িটি বানানো হয়েছে। বাবার কাছ থেকে প্রতিদিন ১০০/২০০ করে টাকা নিয়ে প্রায় দেড় বছর ধরে এটি তৈরি করা হয়েছে।
তিনি জানান, কেবলমাত্র চাকা আর স্টিয়ারিং হুইলটা কেনা হয়েছে। বাকি সব নিজের হাতে তৈরি। যা অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। পুরো গাড়িটি এই অবস্থায় দাঁড় করাতে তার ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। তবে গাড়ির বডি কার্বন ফাইবারে নিয়ে আসলে ৩ লাখ টাকাতেও বানানোও যাবে।
আকাশের বাবা বলেন, আমার ছেলে এই গাড়ি বানিয়েছে এটা এখনও এলাকার অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না। সরকারের কাছে অনুরোধ করবো- যাতে আমাকে গাড়ি বাজারজাত করার অনুমতি দেয়া হয়। অন্য কারও কাছে আমি এটির নকশা বিক্রি করতে চাই না। শুধু অনুমতি দিলেই আমার জন্য অনেক বড় সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, এই গাড়িটি দেখিয়ে ২৫টি গাড়ি তৈরির অর্ডার পেয়েছি। বাজারজাত করলে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকাতেই মানুষ পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি ব্যবহার করতে পারবে।
আকাশ আহমেদ বলেন, গাড়িটিতে প্রায় ৫টি ব্যাটারি লাগানো হয়েছে। যেটি প্রায় ১০ ঘণ্টা চলতে সক্ষম। আর এই ব্যাটারি পূর্ণ চার্জ হতে সময় নেবে ৫ ঘণ্টা। আর রাস্তায় নামলে দুইজন আরোহীকে নিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারবে গাড়িটি। গাড়িটি নিয়ে দেড় বছরে প্রতিনিয়তই সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকটা অনুমান নির্ভর হয়েই অধিকাংশ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য ছিল একটাই। আর সে কারণেই আমি গাড়িটি তৈরি করতে পেরেছি। ঈদের ছুটিতে গাড়িটি নামানোর পরেই অসাধারণ সাড়া পেয়েছি। কেউ কেউ হিংসায় বাজে মন্তব্য করলেও তাতে পাত্তা দেইনি। নিজের পরিশ্রমে তৈরি করেছি এই গাড়িটি। তবে গাড়িটিতে আরও কিছু কাজ বাকি আছে। যেমন গাড়ির দরজাগুলো সুইচের মাধ্যমে অটো দরজা খুলবে ও বন্ধ হবে।
গাড়িটি নিয়ে পরবর্তী লক্ষ্য কী- জানতে চাইলে আকাশ বলেন, আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করবো- যাতে আমাকে গাড়ি বাজারজাত করার অনুমতি দেয়া হয়। অন্য কারও কাছে আমি এটির নকশা বিক্রি করতে চাই না। শুধু অনুমতি দিলেই আমার জন্য অনেক বড় সুবিধা হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি দেখিয়ে ২৫টি গাড়ি তৈরির অর্ডার পেয়েছি। বাজারজাত করলে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকাতেই মানুষ পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি ব্যবহার করতে পারবে। ব্যক্তিগতভাবে আরেকটি গাড়ি বানানোর ইচ্ছা আছে। তবে সেটির মডেল আপাতত জানাতে চান না আকাশ।