চলতি বিশ্বকাপের পরিসংখ্যানে নজর রাখলেই দেখা যাবে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। তিন ম্যাচে ৮৬.৬৬ গড়ে তিনি করেছেন ২৬০ রান। ১২১ রানের অনবদ্য একটি ইনিংসও রয়েছে তার ব্যাটে। বল হাতেও দারুণ পারফরমার তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই যা খরুচে ছিলেন। এ ছাড়া অন্য দুই ম্যাচে নিয়েছেন ৩ উইকেট। বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত টপ ফ্যান্টাসি (ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট) ক্রিকেটারের মধ্যে শীর্ষেই রয়েছে সাকিবের নাম।
দারুণ ধারাবাহিক এই ক্রিকেটারের পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা নিয়েই তৈরি হয়েছে দারুণ এক শঙ্কা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একা বুক চিতিয়ে লড়াই করে ১২১ রানের যে ইনিংসটি তিনি খেলেছিলেন, তখনই নাকি কোমরের নিচে ব্যথাটা টের পেয়েছিলেন। যার দরুন আজ ব্রিস্টলে দলের অনুশীলনে এসেও নেটে ব্যাটিং-বোলিং কিছুই করলেন না।
স্ক্যান করানো হয়েছিল সাকিবের আঘাত পাওয়া জায়গায়। সেই স্ক্যান রিপোর্ট বাংলাদেশ সময় আজ রাত সাড়ে ১১টার দিকে (স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) হাতে এসে পৌঁছেছে টিম ম্যানেজমেন্টের। তাতেই দেখা যাচ্ছে, সাকিবের ব্যথাটা মূলত উরুতে এবং এটা হচ্ছে গ্রেড ওয়ান ইনজুরি। অর্থাৎ খুব বেশি গুরুতর কিছু নয়। তাকে বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন এ তথ্য। তিনি বলেন, ’স্ক্যান করার পর দেখা গেছে তার উরুতে ব্যথা। গ্রেড ওয়ান ইনজুরি। চিকিৎসকরা বলে দিয়েছেন, বিশ্রামে থাকতে হবে। এটাই আপাতত চিকিৎসা।’
তাহলে কি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মঙ্গলবারের ম্যাচে খেলতে পারবেন না সাকিব? দলীয় ম্যানেজার জানালেন, ’খেলতে পারবে কি পারবে না, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। কাল সকালেই তার অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অর্থাৎ কাল সকালের আগে মোটেই বোঝা যাবে না, সাকিব শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একাদশে থাকতে পারবেন কি না।’
অর্থাৎ ইনজুরির যে অবস্থা তাতে খেলতে না পারার কিছুই নেই হয়তো। খেলা সম্ভব। তবে কাল সকাল পর্যন্ত অবস্থা কী দাঁড়াচ্ছে, সাকিব নিজে কেমন বোধ করছেন, খেলতে গেলে নতুন কোনো ঝুঁকি তৈরি হবে কি না- সে সব বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তার খেলা হবে কি না।
আজ ব্রিস্টলে সকাল বেলা রোদ ঝলমলে পরিবেশে সাকিব আল হাসান অনুশীলনে এসেছিলেন দলের সঙ্গে। সবার সঙ্গে হালকা ওয়ার্মআপ-স্ট্রেচিংও করেছিলেন। কিন্তু এরপর সবাই যখন ট্র্যাকস্যুট খুলে গেলেন নেট সেশনে, সাকিব বসে থাকলেন নিজের ট্র্যাকস্যুট গায়ে নেটের পাশেই।
প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে সেখানেই বসে বাকিদের নেট সেশন দেখলেন, নিজে যেতে পারলেন না। এক সময় চলে গেলেন ড্রেসিংরুমে, পরে টিম হোটেলে। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে টানা তিন ম্যাচে ৫০ প্লাস ইনিংস খেলে দারুণ ফর্মে ছিলেন, মাঠেও দেখা গেছে সাকিবের অন্যরকম আত্মপ্রত্যয়ী এক রূপ। কিন্তু বাধ সাধলো ইনজুরি, আগের ম্যাচেই যে টান লেগেছিল পায়ে সেটিই দিলো না আজকে নেটে যেতে। আগামীকাল ম্যাচও খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে দারুণ সংশয়।
প্রায় এক দেড় বছর ধরেই ইনজুরি পিছু ছাড়ছে না সাকিব আল হাসানের। এতদিন ইনজুরি ছিল হাতের আঙুলে। আয়ারল্যান্ড সিরিজে সাইড স্ট্রেইনে। এবার টান লাগলো উরুতে। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বাংলাদেশের ভাগ্যটাও যে অনিশ্চিতের দিকে চলে গেলো, সেটা বলাই বাহুল্য।