মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি নাইটক্লাব থেকে চার বাংলাদেশি কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজ বলছে, বাংলাদেশি এই চার কিশোরীকে নাইটক্লাবে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছিল। নাইটক্লাব থেকে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার তাদের আদালতে তোলা হয়।
দুবাইয়ের আল-মুরাকাব্বাতের একটি নাইটক্লাবে নৃত্যশিল্পী এবং পতিতাবৃত্তির কাজ দেয়ার কথা বলে গত বছর এই চার কিশোরীকে আমিরাতে নেয়া হয়। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৬ থেকে ১৭।
চলতি বছরের মার্চে দুবাইয়ের একটি নাইটক্লাবে এক কিশোরী নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করছেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য আসে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই নাইটক্লাব থেকে ১৯ নারী ও পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তদের প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ৩৯।
দেশটির পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ওই নারীরা নৃত্যশিল্পী এবং পতিতা হিসেবে নাইটক্লাবে কাজ করতেন। এদের মধ্যে চারজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আমরা ওই নাইটক্লাবে অভিযান চালিয়ে ভুক্তিভোগীদের উদ্ধার করে দুবাইয়ের নারী ও শিশু আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করেছি। তিনি বলেন, দেশটিতে ওই নারীদের নেয়ার জন্য পাসপোর্টে বয়স বাড়িয়ে দেয় অভিযুক্তরা।
১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী বলেন, দেশে পরিবারকে সহায়তার জন্য তিনি দুবাইয়ে আসতে রাজি হয়েছিলেন। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তার পাসপোর্টের ব্যবস্থা এবং বিমান ভাড়ার টাকাও দিয়েছিলেন। পরে দুবাইয়ে পৌঁছার পর তাকে অন্য মেয়েদের সঙ্গে একটি বাড়িতে নেয়া হয়। ওই কিশোরী বলেন, আমি একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করতে রাজি হয়েছিলাম। কারণ আমার পরিবার খুবই দরিদ্র এবং অর্থের প্রয়োজন।
‘দেশটিতে পৌঁছানোর চারদিন পর তারা আমাদের একটি নাইটক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের বলা হয়, আমরা এখানে নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করবো। প্রত্যেক মাসে অন্তত তিনজন কাস্টমারের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য তারা আমাকে নির্দেশ দেয়।’
গত বছরের বিভিন্ন সময়ে এই কিশোরীদের আমিরাতে নেয়া হয়। পাঁচজনের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে আদালতের কাছে তারা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বীকারোক্তি নেয়ার জন্য আগামী ১৮ জুন আদালতে পুনরায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।