যুক্তরাষ্ট্র-ইরান চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় দৈনিক আরব নিউজ তাদের মতামত পাতায় ওয়াশিংটনকে তেহরানে হামলার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের ওই সম্পাদকীয় মতামতে বলা হচ্ছে, ‘শাস্তির হাত কোনোভাবেই রেহাই পেতে পারে না ইরান।’
আরব নিউজ সৌদি রাজতন্ত্রের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত। রাজধানী রিয়াদ থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটি বলছে, গত মঙ্গলবার দুটি তেল পাম্পে সশস্ত্র ড্রোন হামলা ও তার দুদিন আগে আমিরাত উপকূলে তেল ট্যাংকারে হামলার মাধ্যমে ইরান যে মারাত্মক উত্তেজনা ছড়িয়েছে তার তদন্ত হওয়া উচিত।
ওই দুই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে দেশটিতে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’বা গুপ্ত হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। পারস্য উপসাগরে ক্রমবর্ধমান মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনার সময় সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত পত্রিকার এই আহ্বানে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
আরব নিউজ বলছে, কেবল সৌদি আরবেই না, পুরো অঞ্চল কিংবা বিশ্বের জন্য ইরানের হুমকির বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের বারবার সতর্ক করে আসছে রিয়াদ। দৈনিকটি বলছে, ‘এটা স্পষ্ট যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সঠিক বার্তা পাচ্ছে না ইরান। তাদের উচিত আরও কঠোরভাবে আঘাত করা।’
সৌদি পত্রিকাটি বলছে, ‘বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে দিতে কিংবা নতুন করে যাতে ভীতিপ্রদর্শন করতে না পারে, সেজন্য ইরানকে ছাড় দেয়া যাবে না। ২০০৮ সালে প্রয়াত সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ ‘সাপের মাথা কেটে ফেলতে’ যুক্তরাষ্ট্রকে এমন অনুরোধ করেছিলেন।’
আরব নিউজের ওই সম্পাদকীয়তে বলা হচ্ছে, ‘প্রশমিতকরণ শব্দটি ইরানের ক্ষেত্রে খাটবে না, যেভাবে হিটলারের বেলায়ও তা কাজে লাগেনি। তাদের কঠোর আঘাত হানা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা সুনির্দিষ্ট শাস্তিমূলক প্রতিক্রিয়া চাচ্ছি। যার মাধ্যমে ইরান তাদের প্রতিটি পদক্ষেপের পরিণাম ভোগ করবে।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক এমনটা চান না বলে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টাদের জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তেহরানের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান, ‘তিনি কোনো যুদ্ধ চান না। যারা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় তিনি তাদের সঙ্গে নেই।’
তবে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে না চাইলেও ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি ওই অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্যে) তাদের স্বার্থ কোনোভানে ক্ষুন্ন হয় তাহলে তিনি তা রক্ষা করবেন। আর নিজেদের রক্ষা করতে যা প্রয়োজন তাই করবেন।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় স্বার্থ সৌদি আরবের সঙ্গে মিত্রতা বজায় রাখা। ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবেন না বললেও স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন। যদি ট্রাম্প মার্কিন মিত্র সৌদির এই আহ্বানে সাড়া দেয় তাহলে যুদ্ধের সম্ভাবনাও থেকে যাচ্ছে।