শুক্রবার মধ্যরাতে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হেনেছে ফণী। ঘণ্টায় প্রায় ৯০ কিলোমিটার বেগে খড়গপুরে শক্তিশালী ঝড় হিসেবেই আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়টি। সেখানে তাণ্ডব চালানোর পর হুগলির আরামবাগের দিকে অগ্রসর হয় সেটি। ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ এখন বাংলাদেশ অভিমুখে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে নদীয়া ও মুর্শিদাবাদের দিকে অগ্রসর হবে। শনিবার দুপুরের মধ্যেই এটি বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। তবে বাংলাদেশে যখন আঘাত হানবে তখন শক্তি অনেকটাই কমে যাবে ফণীর।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু দোকান ও মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
তবে কলকাতাতে ফণীর জোরালো প্রভাব পড়েনি। আশঙ্কা করা হচ্ছিল কলকাতার উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যাবে। রাতের দিকে ঝোড়ো হাওয়া বইলেও তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার। শহরের কিছু জায়গায় এর প্রভাবে গাছ উপড়ে পড়ে।
রাতভর কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে শুক্রবার রাত থেকেই কলকাতার নানা এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। রোববার পর্যন্ত অনেকের ছুটিও বাতিল করা হয়।
আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, ফণীর প্রভাবে কলকাতাসহ বেশ কিছু জেলায় বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভুম, নদীয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে।
শুক্রবার সকালে ২২০ কিলোমিটার বেগে ওড়িশায় আঘাত হানে ফণী। ওড়িশার পুরী ও ভুবনেশ্বরে ভয়ানক তাণ্ডব চালায়। ইতোমধ্যে সেখানে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রশাসন আশঙ্কা করছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছিল, পুরীর পর প্রবল শক্তিশালী হয়ে বাংলার দিকে অগ্রসর হবে ফণী। আঘাত হানতে পারে ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার বেগে। স্বাভাবিক ভাবেই চরম আশঙ্কায় প্রহর গুনছিল পশ্চিমবঙ্গ।
শুক্রবার সকালে স্থলভাগে প্রবেশের পরে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে ফণী। পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার আগেই ফণীর প্রভাব পড়তে শুরু করে দিঘা, মন্দারমণিসহ উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে। বিকেলের পর থেকে উপকূলীয় এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার।
দিঘায় সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে। উপকূল ছাপিয়ে নীচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকতে শুরু করে সন্ধ্যার সময়। তাই আগে থেকেই ওই সব এলাকাগুলি থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
সৌজন্যে- জাগো নিউজ