Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

usa-jailযুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে প্রাপ্ত বয়স্ক অভিবাসী বন্দিদের সঙ্গে অভিভাবকহীন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি শিশু বা অপ্রাপ্ত বয়স্ককে বন্দি রাখা হয়েছে। একটি অ্যাডভোকেসি গোষ্ঠী ক্যালিফোর্নিয়ার একটি কারাগারে দুই বাংলাদেশি শিশুকে রাখার ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের কয়েক দিনের মাথায় মার্কিন সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

আদালতের নথি ও অ্যাডভোকেসি গোষ্ঠীর অভিযোগ অনুসারে, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশী এই বাংলাদেশিদের প্রথমে শিশুদের কারাগারে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরে শুধু প্রাপ্ত বয়স্কদের কারাগারে নেওয়া হয়। বয়স নির্ধারণে বিতর্কিত রেডিওগ্রাফিক ডেন্টাল পরীক্ষার পর তাদের সরানো হয়।

chardike-ad

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট ভাইস নিউজ’র খবর অনুসারে, বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপের পর অভিবাসীদের বয়স নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যালয়ের প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। কারণ বয়স অভিবাসীদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

ওয়েবসাইটের খবরে অভিবাসীদের বিানমূলে আইনি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ডেপোর্টেশন ডিফেন্স হস্টন-এর ব্যবস্থাপক আইনজীবী জুলি পাখকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, অভিবাসন আইনজীবী হিসেবে আমার ছয় বছর কাজের সময় একই সময়ে বা একটি জাতির মানুষের ক্ষেত্রে এমন কোনও ঘটনা দেখিনি।

এই আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, গত বছর অক্টোবরে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন বাংলাদেশি কিশোরকে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কাছে হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী পুনবার্সন কার্যালয়। এই সংস্থাটিই প্রাপ্ত বয়স্কদের কারাগার পরিচালনা করে থাকে। জন্মের সনদে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং বয়স নির্ধারণে দাঁতের পরীক্ষা অমীমাংসিত থাকার পরও এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন আইন অনুসারে, সীমান্তে আটক শিশুদের প্রাপ্ত বয়স্কদের চেয়ে ভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে আটক রাখা হয়। তাদেরকে শিশুদের জন্য নির্মিত বন্দিশালায় রাখা হয় বা পরিবারের সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছেড়ে দেো্য়া হয়। এছাড়া তাদের জন্য আদালতের প্রক্রিয়াও ভিন্ন এবং দ্রুত অভিবাসন বিরোধের মীমাংসা করা হয়।

দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের অ্যাডভোকেসি গোষ্ঠী সাউথ এশিয়ান অ্যামেরিকানস লিডিং টুগেদার নামের সংগঠনের পক্ষ থেকে সান ডিয়েগো কারাগারে দুই শিশুর প্রতি আচরণের বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এমনকি দুই শিশুর আইনজীবী তাদের বয়সের পক্ষে প্রমাণ তুলে ধরলেও আইসিই তাদের বয়স্কদের সঙ্গে আটক রেখেছে। আইসিই’র নিজস্ব ফরেনসিক তদন্তেও প্রমাণিত হয়েছে বয়স নির্ধারণে দাঁতের রেকর্ড পর্যালোচনা সন্দেহাতীত নয়।

অভিযোগ অনুসারে, এই দুই শিশুর প্যারোলে মুক্তি খারিজ করা হয়েছে এবং সমাজের জন্য বিপজ্জনক না হওয়ার প্রমাণ হাজির করলেও জামিন মঞ্জুর করা হয়নি।

মার্কিন আইসিই অভিবাসীদের বয়স নির্ধারণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বিভিন্ন কারাগারে সংস্থাটির কর্মকর্তারা শরণার্থী প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত পর্যালোচনা করেন। বন্দিদের বায়োমেট্রিক তথ্যও ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিট ব্যবস্থা দ্বারা যাচাই করা হয়।

আইসিই মুখপাত্র লরেন ম্যাক এক বিবৃতিতে বলেন, বিষয়টি যখন বয়স সংশ্লিষ্ট এবং আইইসি’র বিধি অনুসারে কর্মকর্তারা জীবনবৃত্তান্ত ও বায়োমেট্রকি তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চান। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপযুক্ত বিদেশি দূতাবাসের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়।

তবে এই পদক্ষেপে কেন বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রল জানিয়েছে, ২০১৮ সালে রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশি বৈধ নথি ছাড়া সীমান্ত অতিক্রম করেছে। বেশিরভাগ বাংলাদেশি অভিবাসীকে মেক্সিকো সীমান্তের লারেডো সেক্টর দিয়ে টেক্সাসে প্রবেশের সময়ে আটক করা হয়েছে।

সৌজন্যে- বাংলা ট্রিবিউন