শমী কায়সারের প্রথম স্বামী কলকাতার অর্ণব রিঙ্গো বিজ্ঞাপন ও সিনেমা নির্মাতা। শমী কায়সারের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে দীর্ঘদিন। এখন তিনি কলকাতা কেন্দ্রীক বিভিন্ন সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, ধারাবাহিক নাটক ও বিজ্ঞাপন নির্মাণে ব্যস্ত। সম্প্রতি তার একটি ওয়েব সিরিজ মুক্তি পেয়েছে। যার নাম হলো ‘সেনাপতিজ’। এই ওয়েব সিরিজে বাংলাদেশকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা এবং বাংলাদেশের জনগণ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শমী কায়সারের প্রাক্তন স্বামীর এই ওয়েব সিরিজে দেখানো হয়েছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পল্টন থেকে একটি পরিবার পালিয়ে কলকাতায় আশ্রয় নেয়। রিঙ্গো কোন জায়গা পাননি। তাদের আশ্রয় দিয়েছেন কলকাতার সোনাগাছিতে। যেটা একটা পতিতা পল্লী হিসেবে স্বীকৃত।
প্রশ্ন উঠেছে রিঙ্গো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বন্ধে কতটুকু জানেন? একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালিরা নিরুপায় হয়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল সত্যি, কিন্তু তারা প্রায় সবাই আশ্রয় নিয়েছিল আশ্রয় শিবিরে। কোন পতিতা পল্লীতে নয়। বাঙ্গালিকে এমন হেয় প্রতিপন্ন করার ধৃষ্টতা রিঙ্গো কোথা থেকে পেলেন?
চার পর্বের এই ওয়েব সিরিজে আরো দেখানো হয়েছে, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর তারা ফিরে আসেনি। বরং তারা ওখানে অন্ধকার জগতের নেতা হিসেবে পরিচিত হয়। রিঙ্গো এমন তথ্য কোথা থেকে পেলেন?
বাঙালিরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর বীর বিক্রমে দেশে ফিরেছেন। যে কথা বাংলাদেশ বারবার বলে আসছে, কোন বাঙালি ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেনি বা থেকে যায়নি। রিঙ্গো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন।
এই চার পর্বের ওয়েব সিরিজে দেখানো হয়েছে, যে তিনজন পালিয়ে কলকাতায় গিয়েছিল তারা পরে ব্যাংক ডাকাত, লুটেরা এবং অন্যান্য অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হয়। তার মানে কি বাংলাদেশের মানুষ এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গেই জড়িত থাকে? এটাই কি রিঙ্গো তার গল্পে বোঝাতে চেয়েছেন?
বাংলাদেশকে বিকৃতভাবে এভাবে চিত্রিত করায় ইতিমধ্যেই সুধী সমাজে ঝড় উঠেছে। শমী কায়সারের এই প্রাক্তন স্বামী একসময় বাংলাদেশেও বিজ্ঞাপন নির্মাণ করতেন। প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে ছিলো তার চলাফেরা। সংস্কৃতি জগতে তাকে সম্মান দেওয়া হত। রিঙ্গোর বানানো এই ওয়েব সিরিজ নিয়ে বাংলাদেশের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভালবাসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।