নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সফল ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা নড়াই সদর হাসপাতালে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়ায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন দুইজন চিকিৎসক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. অশিত মজুমদার ও আমিনুল ইসলাম জুয়েল মাশরাফি সম্পর্কে অশোভন মন্তব্য করেছেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় ভাইরাল হয়েছে। কটূক্তিকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ম্যাশ ভক্তরা।
ফেসবুকে ডা. অশিত মজুমদার লিখেছেন, মাশরাফিটা কে? আমিনুল ইসলাম জুয়েল লিখেছেন, নড়াইলের কোনো পাতি নেতাটেতা হবে আর কি! অশিত পুনরায় লিখেছেন, সে রকমই তো ক্ষেতের মত এটিচিউড করল। আমিনুল ইসলাম জুয়েল পুনরায় লিখেছেন, কিছু বুঝে নাকি? সেভেন এইট পাশ মনে হয়। বিষয়টি স্ক্রিনশটসহ ফেসবুকে আপ করা হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ম্যাশরাফি ভক্তরা। এমন কটূক্তিকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মঞ্জুর মোর্শেদ নামে একজন লিখেছেন, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সফল ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আপনারা তো শিক্ষিত মানুষ। একজ সর্ম্পকে না জেনে বাজে মন্তব্য করলেন। আপনারা কোন দেশের ডাক্তার যে মাশরাফি কে চনেন না। মেধা থাকলে অবশ্যই চিনতেন। ডাক্তার হতে হয়তো আপনাদের মা-বাবাদেরকে টাকা দিয়ে আগের রাতে উত্তরপত্র কিনতে হয়েছিলো।
ফরহাদ আহম্মেদ লিখেছেন, সারা দিনরাত ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমিশন, চেম্বারে বসা আবার কষ্ট করে হাসপাতালে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই দেয়া, ফ্রি ওষুধ বিক্রি, ওষুধ কোম্পানির কথামত (দরে পটলে) পেসক্রিপশনে তাদের ওষুধের নাম লেখা, ইত্যাদি। নেশা, পরকীয়া থাকগে। এতো কিছু করে মাশরাফিকে চেনার সময় কই।
মোস্তফা কামরুজ্জামান কামাল লিখেছেন, এদের পুরো ঠিকানা দিয়ে সহযোগিতা করলে পুরস্কৃত করবো…। সৈয়দ সামিউল আলম জেহাদ লিখেছেন, মাশরাফি সমন্ধে কটূক্তিকারিরা সাবধান। মাশরাফির অপর নাম বাংলাদশে। মাশরাফি আমাদের গর্ব।কটূক্তিকারিদের বিচার চাই। মো. রানা লিখেছেন, এই দুই জানোয়ারকে টার্মিনালে এই আম গাছে ঝুলায়ে পিটাতে হবে। জানোয়ার আইডি পেয়ে নিই।
উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে আকস্মিকভাবে সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা। এসময় কর্তব্যরত ৩ চিকিৎসকের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না দেখে তিনি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর এবং পরে অনুপস্থিত সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আকরাম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের সাথে কথা বলে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সমস্যার কথাও শোনেন।
তিনি এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখতে পান। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন। হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে এ সভায় জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন পিপিএম, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর, সিভিল সার্জন ডা. আসাদ-উজ-জামান মুন্সি, হাসপাতালের আর.এম.ও ডা. মশিউর রহমান বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় এমপি মাশরাফি-বিন মর্তুজা বেশ কিছু বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। শনিবার অনুপস্থিত সেই তিন চিকিৎসককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।