মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তৃতীয় দফা বৈঠকে বসতে রাজি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। জাতীয় গণমাধ্যমের বরাতে আজ শনিবার বলা হয়, ওয়াশিংটন যদি ‘সঠিক মনোভাব’ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেয়, তবে উত্তর কোরিয়ার কোনো আপত্তি নেই।
কিম বলেন, বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে প্রস্তুত তিনি। যুক্তরাষ্ট্র যাতে পরবর্তী বৈঠকে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ নিতে পারে, এ জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে রাজি উত্তর কোরিয়া। এর আগে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে সর্বসম্মত কোনো চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া দ্বিতীয় দফার বৈঠক ভেস্তে যায়।
গত ফেব্রুয়ারিতে এ বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ার জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেছে ওয়াশিংটন। ওই সময় সীমিত পরিসরে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি বিলোপে উত্তর কোরিয়ার প্রস্তাব মেনে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে পিয়ংইয়ং বলছে, তারা কেবল কিছু পদক্ষেপ শিথিল করার দাবি জানিয়েছিল।
গতকাল শুক্রবার পিয়ংইয়ংয়ের কাগজে-কলমে অনুমোদিত সংসদে এক বক্তব্যে কিম জানান, হ্যানয় বৈঠকে ওয়াশিংটনের মনোভাবে তাঁর মনে প্রশ্ন জেগেছে, ওয়াশিংটন কি পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে ‘সত্যিই আগ্রহী’?
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সিকে (কেসিএনএ) দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সঠিক মনোভাব নিয়ে উভয় পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য শর্ত সাপেক্ষে আলোচনায় বসতে চায়, তবে আমরা তৃতীয় দফা বৈঠকের মাধ্যমে আরেকবার চেষ্টা করে দেখতে পারি।’
ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক এখনো যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ দাবি করে উন বলেন, তাঁরা চাইলে যখন খুশি তখন ‘পরস্পরকে চিঠি লিখতে পারেন’। গত বছরের জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের মধ্যকার বহুল প্রত্যাশিত প্রথম বৈঠকটি সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপে অনুষ্ঠিত হয়। সেবার ‘কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু শক্তিচ্যুত’ করার একটি অস্পষ্ট চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দেশ দুটি।
তবে দ্বিতীয় দফা হ্যানয় বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘কিমের সঙ্গে তৃতীয় বৈঠকের ব্যাপারে আমরা গভীর চিন্তাভাবনা করছি।’ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সঙ্গে ওভাল অফিসে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় এ কথা জানান তিনি। সিউলের পক্ষ থেকে এই বৈঠককে সমর্থন দেওয়া হয়।
আজ মুনের অফিসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সংলাপের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আমাদের সরকার।’ গতকাল শুক্রবার কেসিএনএর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, স্টেট অ্যাফেয়ার্স কমিশনের চেয়ারম্যান পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন কিম। উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পদ এটি।
সৌজন্যে- প্রথম আলো