পাকিস্তানে সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা নেটওয়ার্ক হিসেবে ওয়াফাক-উল-মাদারিস সুপরিচিতি। ১৯৮২ সাল থেকে এ নেটওয়ার্কের আওতায় অন্তত ১০ লাখ শিক্ষার্থী কুরআনে হাফেজ হয়ে বের হয়েছে। সামা টিভিকে বুধবার সকালে ক্বারি হাফেজ জালনধরি এ তথ্য জানান। হাফেজ জালনধরি ওই মাদ্রাসা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, এ বছর ৭৮ হাজার শিক্ষার্থী কুরআনে হাফেজ হচ্ছেন যাদের মধ্যে ১৪ হাজার মেয়ে বা হাফেজা রয়েছেন। চার বছর থেকে সাত বছরের শিশু শিক্ষার্থীরা এসব মাদ্রাসায় কুরআনে হাফেজ হতে আসেন এবং নিবিড় প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে দুই বছরে কুরআন হেফজ করেন। একই সঙ্গে এসব শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা ও বিজ্ঞান, গণিত, ইংরেজি, উর্দু ও পাকিস্তান স্টাডিজ নিয়ে পড়াশুনা করেন।
জালনধরি একই সঙ্গে পাকিস্তানে এধরনের শিক্ষার সঙ্গে সৌদি আরবের শিক্ষার তুলনা করে বলেন, সৌদি আরবে বছরে ৫ হাজার শিক্ষার্থী কুরআনে হাফেজ হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, যদিও আরবি আমাদের মাতৃভাষা নয়, তবে পাকিস্তানের অধিকাংশ শিশুরা কুরআন অধ্যয়নের মধ্যে দিয়ে বেড়ে ওঠে। সৌদি আরব সরকার পাকিস্তানের এই মাদ্রাসা নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অবহিত এবং সহায়তা দিয়ে থাকে।
পাকিস্তানের এসব মাদ্রাসায় বিনামূল্যে শিক্ষা দেয়া হয়। ভোর ৬টায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু হয়। এরপর খাবার ও নামাজের বিরতি সহ রাত ১০টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণ করে। তাদের খেলাধুলা করতে দেওয়া হয়। ইউরোপের একটি দেশের রাষ্ট্রদূত একবার জালনধরিকে জিজ্ঞেস করেন, কেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কুরআন হেফজ করার সময় দোল খায়। এর জবাবে জালনধরি তাকে জানান, শিশুরা কুরআন হেফজ করার সময় আনন্দে দোল খেতে থাকে।
জালনধরি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সেনাবাহিনী প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলাম পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন। এক অভিন্ন শিক্ষা কারিকুলাম পাকিস্তানের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু করার দাবিও জানান জালানধারি। এর ফলে পাকিস্তানের মাদ্রাসা থেকে চরমপন্থার উদ্ভব বন্ধ হবে বলে মনে করেন জালানধারি এবং একটি জাতীয় পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তা করা উচিত বলে জানান জালানধারি।