চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের এক সদস্যসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের একাংশের ডাকা ছাত্র ধর্মঘট চলাকালে রোববার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে পুরো ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
সংঘর্ষে পুলিশের কনস্টেবল ফরিদ, ছাত্রলীগ কর্মী আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের সাদি মুর্শেদ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের মুখলেছ, নৃ বিজ্ঞান বিভাগের একই সেশনের রমজান আহত হয়েছেন। এছাড়া আরও একজন ছাত্রলীগ কর্মী ও দুইজন পথচারীও আহত হন। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামান ও বেশ কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জে দুই ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ছাত্রলীগের ছোড়া ইট-পাটকেলে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে ডিবি পুলিশের গাড়ি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ধর্মঘটের শুরুতেই শাটল ট্রেন আটকে দেয়া হয়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে শাটল ট্রেনের কয়েকটি বগির হোস পাইপ কেটে দেয়ার ঘটনা ঘটে। সকাল পৌনে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় তারা প্রধান ফটক আটকে দিয়ে অস্ত্র মামলায় কারাগারে থাকা চার ছাত্রলীগ কর্মীকে মুক্তিসহ চার দফা দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা জিরো পয়েন্টে আসেন। তারা দফায় দফায় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করতে অনুরোধ করেন এবং উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে যেতে বলেন। কিন্তু তাতে আশ্বস্ত না হয়ে কর্মীরা তাদের অবস্থানে অটল থাকে। এ সময় তারা উপাচার্যকে তাদের এখানে আসতে স্লোগান দিতে থাকেন।
বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে জিরো পয়েন্টের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশের জলকামান৷ এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ একপর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দোলা রেজা হ্যান্ডমাইকে ছাত্রলীগ কর্মীদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করে বলেন, মামলা ও মুক্তির বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা করবে। তাতেও রাজি হয়নি ছাত্রলীগ কর্মীরা।
পরে পুলিশের জলকামানের গাড়ি ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় পুলিশ সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা ফটক লাগিয়ে পুলিশকে ধাক্কা দেয়। এতে উভয় পক্ষ বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে শুরু হয় পুলিশের লাঠিচার্জ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় পুলিশ জিরো পয়েন্টে এবং ছাত্রলীগ কর্মীরা কাটা পাহাড়ের রাস্তায় ও শাহ জালাল হলের সামনে অবস্থান নিয়ে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে৷
হাটহাজারী থানার ওসি বেলাল উদ্দিন বলেন, সংঘর্ষে একজন কনস্টেবল আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।