ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের যে বিমানটি গত মাসে বিধ্বস্ত হয়েছে সেটি পুরোপুরি মাটিতে পড়ে যাবার আগে সেটির সামনের অংশ কয়েকবার নিচের দিকে নেমে এসেছিল। বোয়িং এর নির্ধারিত ম্যানুয়াল মেনে এ সময় পাইলটরা সেটিকে ঠিক করার জন্য বারবার চেষ্টা করেছে। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে এ কথা উঠে এসেছে। বোয়িং এর শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন যে বিমানের অ্যান্টি-স্টল সিস্টেমের কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবা থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ইথিওপিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী বলেছেন, বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও পাইলটরা বিমানটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। গত পাঁচ মাসের মধ্যে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান দ্বিতীয়বারের মতো বিধ্বস্ত হয়।
প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্রুরা বিমানটি পরিচালনার জন্য পুরোপুরি দক্ষ ছিলেন। তারা সব ধরণের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়। তবে এই প্রতিবেদনে বিমানের অ্যান্টি-স্টলিং সিস্টেমকে সরাসরি দায়ী করা হয়নি।
এক পর্যায়ে বিমানের ক্যাপ্টেন অপর পাইলটকে উদ্দেশ্য করে ‘উপরে তোল, উপরে তোল’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। বিমানের ক্যাপ্টেন ফার্স্ট অফিসারকে নির্দেশ দেয় কন্ট্রোল টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ করতে। বিমানটি নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হবার বিষয়টি কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানানোর জন্য ক্যাপ্টেন ফার্স্ট অফিসারকে নির্দেশ দেয়।
এদিকে বোয়িং এর প্রধান নির্বাহী ডেনিস মুলেনবার্গ বলেছেন, যাত্রীদের আস্থা ফেরানোর জন্য সংস্থাটি সব ধরণের কাজ করবে। তিনি স্বীকার করেন যে অ্যান্টি-স্টলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকার কারণে ইন্দোনেশিয়ায় লায়ন এয়ার এবং ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান দুটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
মুলেনবার্গ জানান, অ্যান্টি-স্টলিং সফটওয়্যারের ত্রুটি সংশোধন এবং পাইলটদের জন্য নতুন নির্দেশিকা দেবার পর বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স হবে সবচেয়ে নিরাপদ বিমান।
ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৭ জন আরোহীর সবাই মারা যাওয়ার পর বোয়িং-এর এই মডেলের বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একের পর এক দেশ বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের উড্ডয়ন বন্ধ রেখেছে।