যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (আরআইটি) স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট নির্বাচনে (২০১৯-২০) বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আনিকা আফতাব প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। শুক্রবার নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হলে আনিকা বিপুল ভোটে জয়ী হন।
গত ২৬ ও ২৭ মার্চ নিউইয়র্কের রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির স্টুডেন্ট গভর্নমেন্টের ২৩টি পদে নির্বাচন হয়। এতে ৩টি প্যানেলে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে যথাক্রমে আনিকা আফতাব ও লিয়াম ম্যাকগ্রো, নিক রেনজোনি ও ইলিয়ট ফিশার এবং ল্যারি উইলিয়ামস ও জয়নেব জেফ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নির্বাচনে আনিকা ও লিয়াম প্যানেল বিপুল ভোটে জয়ী হয়। এ ছাড়া স্টুডেন্ট গভর্নমেন্টের আরও ২১ পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ঢাকা থেকে আসা আন্তর্জাতিক ছাত্র বাংলাদেশি রাফী করিম স্টুডেন্ট গভর্নমেন্টে সিনেটর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
অর্গানাইজেশনাল স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড হেলথকেয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আন্ডার গ্রাজুয়েট আনিকা বক্সিং খেলতে পছন্দ করেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি রাজনীতিবিদ হতে চান।
আগামী ১০ মে আনিকার গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন হবে। এরপর তিনি নিউরো সার্জারিতে মাস্টার্স করতে চান। তবে বিজনেস অ্যাডনিনিস্ট্রেশনেও তার উচ্চতর পড়াশোনা করার ইচ্ছা রয়েছে। আনিকা জানান, পড়াশোনা শেষ করে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংগঠনের সাথে যুক্ত হতে চান তিনি। তবে তার ইচ্ছা একজন রাজনীতিবিদ হওয়া।
আনিকা আফতাবের ডাক নাম অত্রি। বাবা নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের বাসিন্দা আফতাব আহমেদ বাপ্পী একজন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার। মা রাইট এইডের স্টোর ম্যানেজার। এ দম্পতির ২ মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে আনিকা বড়। অবসরে ব্যক্তি উন্নয়ন বিষয়ক বিভিন্ন বই ও উপন্যাস পড়তে ভালোবাসেন আনিকা।
রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আরআইটি) যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা আইটি, আর্ট ও ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮২৯ সালে নিউইয়র্কের রচেস্টার এলাকায় স্থাপিত ক্যাম্পাসের আয়তন ১৩০০ একর। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এর মধ্যে শ্বেতাঙ্গ ৬৬ শতাংশ, হিসপেনিক ৭ ও কৃষ্ণাঙ্গ ৫ শতাংশ। এশিয়ান ছাত্রছাত্রী ৮ ও আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে ৬ শতাংশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশ্ববিদ্যালয়টির চারটি ক্যাম্পাস রয়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান খন্দকার আবদুল্লাহ পুলিশের উচ্চপর্যায়ের নির্বাহী পদে যোগ দেন। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পুলিশ বাহিনী হিসেবে পরিচিত এনওয়াইপিডির ক্যাপ্টেন পদে আসীন হন ৩৩ বছর বয়সী খন্দকার আবদুল্লাহ।
২০০৫ সালের সামারে নিউইয়র্কের পুলিশ বিভাগে যোগ দেন খন্দকার আবদুল্লাহ। তিনি কলেজে পড়ার সময় জব ফেয়ারে দেখেন, এনওয়াইপিডিতে লোক নেয়া হচ্ছে। প্রথমে তিনি খণ্ডকালীন ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দেন পুলিশ বিভাগে। ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় সিদ্ধান্ত নেন পুলিশ ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেয়ার।
খন্দকার আবদুল্লাহ ১৯৯৩ সালে মা-বাবার সঙ্গে অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। নিউইয়র্কের কুইন্সের এস্টোরিয়া আর উডসাইড এলাকায় তিনি বেড়ে ওঠেন।
এনওয়াইপিডির সদস্যসংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। নিয়মিত বাহিনীতে প্রায় ৩০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। নিউইয়র্ক নগরীর ট্রাফিকসহ পুলিশের অন্যান্য বিভাগ মিলে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।