রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৯ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৭ জন মারা গেছেন।
এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭৬ জন। এদের মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৪৫ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ২০ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ১০ জন এবং সিএমএইচে একজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টায় ফায়ার সার্ভিসের হালনাগাদ তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের কর্তব্যরত কর্মকর্তা মাহফুজ রিবেন রাত পৌনে ১টায় বলেন, শুকবার সকাল ১০টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে।
এর আগে রাত সাড়ে ১১টায় ফায়ার সার্ভিস থেকে ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানানো হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস দুঃখ প্রকাশ করে তালিকা সংশোধন করে ফের মরদেহের সংখ্যা ১৯টি লিখে দেয় বোর্ডে।
এ বিষয়ে বনানীর সিনিয়র স্টেশন অফিসার খুরশিদ আলম বলেন, কুর্মিটোলায় পাঠানো ছয়টি মরদেহ যখন ফের ঢামেকে পাঠানো হয় তখনই গণ্ডগোল বাঁধে। ওই ছয়টি যোগ করে ২৫ করে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া শাখা।
এর আগে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) দিলীপ কুমার ঘোষ। তখন তিনি জানান, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে উদ্ধারকাজ চলছে। ভবনে কেউ জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় আটকা পড়ে আছে কি না- তা অনুসন্ধানে উদ্ধার টিম কাজ করছে।
এদিকে গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আব্দুল আহাদ নিহত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন- পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), মামুন (৩৬), আমিনা ইয়াসমিন (৪০), আব্দুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মনির (৫০) ও মাকসুদুর (৩৬)।
জানা গেছে, ঢামেকে নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল্লাহ আল ফারুক এবং কুর্মিটোলায় নিহতের নাম নিরস ভিগ্নে রাজা (৪০)। কুর্মিটোলায় নিহত রাজা শ্রীলঙ্কার নাগরিক এবং স্কেন ওয়েল লজিস্টিকসের ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। তবে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ঢামেক ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই বাচ্চু জানান, বিকেল ৪টা ৩৮ মিনিটের দিকে আব্দুল্লাহ আল ফারুক মারা যান। তাকে অজ্ঞান অবস্থায় ঢামেকে আনা হয়। হাসপাতালে আনার পরও তার জ্ঞান ফেরেনি।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের ১৭ নম্বর রোডের ২২তলা ভবনে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট দীর্ঘক্ষণ কাজ করার পর বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।
এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে পৃথক শোকবার্তায় তারা এ মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আহতদের আশু সুস্থতাও কামনা করেন তারা।
সৌজন্যে- জাগো নিউজ