ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার পর মুসলিম সম্প্রদায়কে শান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেন সহ সর্বস্তরের মানুষ। তা সত্ত্বেও কোথাও কোথাও বৈষম্য, মৌখিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন মুসলিমরা। হিজাব পরার কারণে অকল্যান্ডে মাউন্ড আলবার্ট রেলস্টেশনে অপদস্ত করা হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের দুই বোনকে। এ রেল স্টেশনটি নিউজিল্যান্ডে। ওই দুই বোনকে অপমান করে তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। ফলে ওই পরিবারের নারীরা হিজাব না পরার কথা বিবেচনা করছেন। এ খবর প্রকাশ করেছে অনলাইন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড।
এতে বলা হয়, পরিস্থিতি অনুকূলে দেখে ইকরা (২১) ও তার ছোটবোন আসমা বাসা থেকে বের হন। তারা মাউন্ট আলবার্ট রেলস্টেশনে যাওয়ার পর তাদের উদ্দেশে নোংরা ভাষা ছুড়ে মারা হয়। এ বিষয়ে নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের সঙ্গে কথা বলেন ইকরা। এ সময় তার কণ্ঠ আতঙ্কে কাঁপছিল। পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত বিরক্তিকর। তবু তিনি মুখ খুলেছেন। মুখ খুলেছেন এ জন্য যে, তাতে মুসলিম ভাইবোনরা আরো সতর্কতা নিয়ে চলাচল করবেন এ জন্য। তাছাড়া কোথাও বেড়াতে বের হলে দলবদ্ধ হয়ে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ইকরা।
ইকরা ও তার বোনের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে যখন এমন অপমানজনক ঘটনা ঘটানো হলো তখন কোনো নিরাপত্তারক্ষীরই দেখা মেলে নি। ছোটবোন আসমাকে নিয়ে তিনি যখন ওই রেলস্টেশনে হাজির তখন তাদের সামনে একবোতল মদ হাতে মদ্যপ এক ব্যক্তি এগিয়ে যায়। সে বলতে থাকে- তোমরা কি দেখছো? আমি মেয়েদের ঘৃণা করি। তোমাদের দেশে ফিরে যাও। একপর্যায়ে সে ইকরা ও তার বোনের শরীরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমাদের পাশে বসা ছিলেন ইউরোপিয়ান একটি মেয়ে। এ অবস্থা দেখে সেই মেয়েটি কান্না শুরু করে দেয়।
ওই ব্যক্তিকে মধ্যবয়সী, ছোটখাটো গড়নের বলে আখ্যায়িত করেছেন ইকরা। বলেছেন, তার পরনে ছিল কালো প্যান্ট ও গায়ে ছিল ধূসর একটি টি-শার্ট।
ইকরা বলেন, শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী ঘটনার পর কেউ এমন অমানবিক হতে পারে এটা আমি বিশ্বাসই করতে পারি নি। এর আগে কখনো এমন অবস্থার মুখোমুখি হই নি আমি। ফলে ঘটনার আকস্মিকতায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম।
তিনি আরো বলেন, এক পর্যায়ে আমি ফোন হাতে নিয়ে পুলিশকে ফোন করার চেষ্টা করি। তখন গর্জন করতে থাকে ওই লোকটি। সে বলতে থাকে- আমি তোমার ছবি তুলে রাখছি। তুমি কুৎসিত এক মুসলিম। এরপর তৃতীয়বার সে আমাকে বলে- তুমি তোমার দেশে চলে যাও।
স্থানীয় পুলিশে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তিনি। পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।