পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসা প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে বিমানবন্দরে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এই কাজ শুরু হয়ে গেছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মনিটর করা হবে।
শনিবার সিলেট নগরীর বন্দর বাজারস্থ রাজা জিসি হাইস্কুল এবং জিন্দা বাজারস্থ রসময় মেমোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত পৃথক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব ঘোষণা দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেল’। আর আমি বলি, বাংলাদেশ ‘মানবাধিকারের রোলমডেল’।
তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশ দরিদ্রপীড়িত ছিল। কিন্তু, আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। যেখানে বাংলাদেশে মাত্র ৯ শতাংশ মানুষের ঘরে বিদ্যুতের আলো ছিল, এখন প্রায় ৯৩ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। গত দশবছরে এদেশের মানুষের আয় বেড়েছে ৩ গুণ।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে সুশিক্ষিত করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বছরের প্রথম দিন স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন। সারাদেশে এখন স্কুল-কলেজে ডিজিটাল ল্যাব তৈরি করা হচ্ছে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সারাদেশের ১ লাখ ৫৬ হাজার স্কুলে একটি করে স্মার্টবুক দেওয়া হবে। এ প্রকল্প অনুমোদন হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে ছেলে মেয়েরা প্রযুক্তিতে আরো দক্ষ হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য বেশ কয়েকটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। তিনি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে দেখতে চান। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এগুলো অর্জন করতে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।
এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুটি নীতি প্রণয়ন করেছে উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, এরমধ্যে একটি হচ্ছে, ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি (অর্থনৈতিক কূটনীতি)। যার মাধ্যমে রূপরেখা অর্জনে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ, প্রযুক্তি সহায়তা নেওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য যোগাযোগ বৃদ্ধি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে আগামী তিন বছরের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেসব দেশ থেকে কী ধরণের সুযোগ-সুবিধা ও বাণিজ্য বিনিয়োগ করা যায় তার তালিকা তৈরি করতে তাদেরকে বলা হয়েছে।
তিনি থিংকট্যাঙ্কদের উদ্ধৃত দিয়ে বলেন, তারা বলছে- পৃথিবীর পাঁচটি দেশ খুব সম্ভাবনাময়। এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। এসব অর্জনকে সারাবিশ্বে জানান দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ মানবাধিকারের রোলমডেল, নারীর ক্ষমতায়নের রোলমডেল হিসেবে বিশ্ববাসীকে অবগত করা, এই কর্মসূচির আরেকটি লক্ষ্য বলে জানান মোমেন।
রসময় মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফসার আজিজের সভাপতিত্বে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেলিম উদ্দিন আহমদ।
অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে রাজা জিসি হাইস্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সৌজন্যে- কালের কণ্ঠ