Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
africa-bangladeshi
দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরকাঘাতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম। পাশে নিহতের স্ত্রী ও স্বজনদের আহাজারি

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরের ক্রাই ফনটেইন এলাকায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। নিহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম জহিরুল ইসলাম হাওলাদার(৪৫)। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৮টায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত জহিরুলের ফুফাতো ভাই শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মনোয়ার হোসেন। নিহত জহিরুল শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের মরহুম সাদেক হোসেন হাওলাদারের ছোট ছেলে।

এদিকে জহিরুলের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌছলে স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে, মা ভাইবোনসহ স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে পরিবেশ। নিহতের স্বজনরা সরকারের কাছে দ্রুত সময়ে লাশ ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

chardike-ad

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার প্রয়োজনে ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান জহিরুল ইসলাম। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে তিনি সর্বশেষ বাড়ি এসে আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যান। দেশটির কেপটাউন শহরের ক্রাই ফনটেইন এলাকায় তার একটি সুপারশপের দোকান ছিল। নিহত জহিরুল ইসলামের ভাড়া বাসার পাশের রুমে সম্প্রতি নতুন স্থানীয় ভাড়াটিয়া বাসা ভাড়া নেয়।

এরপর ওই ভাড়াটিয়ারা জহিরুলের কাছে মদ খাওয়ার জন্য চাঁদা দাবি করে। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানায় জহির। এ নিয়ে শনিবার সকালে ওই ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা জহিরের পেটে ছুরিকাঘাত করে। পরে জহির জীবন বাঁচাতে চিৎকার দিতে দিতে রাস্তায় বের হয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকে দৌড়ে ধরে গলায় ছুরিকাঘাত করে ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন জহিরুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে জহিরুলের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌছানোর পর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে, মা ও ভাইবোনসহ স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে পরিবেশ।

স্ত্রী নাসিমা বেগম স্বামীর স্মৃতি স্মরণ করে তার সাথে তোলা ছবি দেখে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন। একমাত্র মেয়ে শরীয়তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মাহিরা ইসলাম অর্পা বাবাকে হারানোর বেদনায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলছেন,‘তোমরা আমার বাবাকে ফিরিয়ে এনে দাও। আমি কাকে বাবা বলে ডাকবো। কে আমাকে মা বলে ডাকবে। আমার বাবা আর কোনো দিন আমাকে ফোন করবে না, আমার খবর নিবে না।’

মৃত ছেলের শোকে জহিরের মা জয়গুন নেছা বিলাপ করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। নিহতের লাশ বর্তমানে আফ্রিকার কেপটাউন শহরের হিমাগারে রয়েছে। নিহত জহিরুল ইসলামের পরিবার দ্রুত জহিরের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন।

সৌজন্যে- নয়া দিগন্ত