আজাদ কাশ্মীরের বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলায় ৩০০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত সরকার। মঙ্গলবার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য প্রকাশ করে।
তবে এ ঘটনায় কেবল একজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বালাকোটের বাসিন্দা। বালাকোট একটি ছোট শহর। এরই পাশের ছোট একটি গ্রামের বাসিন্দাদের তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হামলা হওয়া ওই এলাকার লোকজন জানিয়েছে ওই একজন বাদে এতে আর কোনো হতাহতের খবর তারা জানে না।
ওই গ্রামের একজন বলেছেন, ‘এখানে জইশ-ই-মোহাম্মদের একটি মাদ্রাসা রয়েছে। যদিও আমাদের মাদ্রাসাটির ব্যাপারে কাউকে কিছু না বলার নির্দেশ রয়েছে। পাহাড়ের ওপরের ওই মাদ্রাসাটি জইশ-ই-মোহাম্মদ পরিচালনা করে।’
গ্রামের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক বাসিন্দা রয়টার্সকে জানান, এলাকাটিতে বেশ কয়েক বছর ধরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি এই এলাকাতেই থাকি। আমি জানি এখানে একটি প্রশিক্ষণ শিবির আছে, যেটি জইশ-ই-মোহাম্মদ চালায়। কয়েক বছর আগে প্রশিক্ষণ শিবিরটি মাদ্রাসায় রূপ নেয়। তবে স্থানীয়দের মাদ্রাসাটির ধারেকাছে যেতে দেওয়া হয় না। সেখানে বেশকিছু শিক্ষার্থী সব সময় থাকে।
গ্রামটি বিবদমান ভারতীয় সীমান্ত থেকে নয়নাভিরাম কাগান ভ্যালির দিকে যেতে ৪০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অবস্থিত। ২০০৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখানকার বহু শহরের সাথে এই বালাকোটও বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকালে গ্রামবাসী দেখতে পায়, ভারতীয় হামলা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে এবং মাদ্রাসাটি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে।
গ্রামের ঠিক যেখানটায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই ‘জাবা টপ’ এলাকার ২৫ বছর বয়সি মোহাম্মদ আজমল জানান, তিনি ভোররাত ৩টার দিকে পরপর চারবার বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝিনি যে আসলে কী হচ্ছে। সকালে আমরা টের পাই যে এখানে হামলা চালানো হয়েছে। আমরা সকালে সেখানে গিয়ে চারটি গর্ত দেখতে পাই। আর কিছু গাছ মাটিতে পড়ে রয়েছে এবং একটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।’
৪৬ বছর বয়সি কৃষক ফিদা হুসেন শাহ বলেন, ‘গ্রামের লোকেরা স্প্লিন্টার পেয়েছেন। তবে কেবল এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, যিনি তার ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। বিস্ফোরিত বোমার স্প্লিন্টার ওই ব্যক্তির ঘরের জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে।’