তিনি একজন সহকারী শিক্ষিকা। একটানা দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ভারতে অবস্থান করলেও প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতা অনুযায়ী তিনি এখন বাংলাদেশে। প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। এমন ঘটনা ঘটেছে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায়। উপজেলার উত্তর কলারণ দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) কনক প্রভা ডাকুয়া হচ্ছেন সেই ‘ক্ষমতাধর’ শিক্ষিকা যিনি দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করার পরও নিয়মিত প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারছেন!
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে মাদরাসায় অনুপস্থিত রয়েছেন উত্তর কলারণ দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) কনক প্রভা ডাকুয়া। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তবুও শিক্ষক হাজিরা খাতায় নিয়মিত তার স্বাক্ষর দেয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী জানান, মাদরাসার সকল শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর শেষে ক্লাসে পাঠদান করতে গেলে সুপার ও সহ-সুপার প্রতিদিনই শিক্ষক কনকের নামের স্থলে জাল স্বাক্ষর দিয়ে হাজিরা খাতা আলমারীতে আটকে রাখেন।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মাদরাসার সুপার আলী হায়দার খানকে পাওয়া যায়নি। তিনি দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রে তার কোনো দায়িত্ব নেই বলে জানান কেন্দ্রসচিব মাওলানা সরোয়ার হোসেন। এসময় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা কনক প্রভা ডাকুয়াকেও মাদরাসায় পাওয়া যায়নি। মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষিকা কনক প্রভা প্রায় ২ মাস ধরে মাদরাসায় আসেন না।
এ বিষয়ে উত্তর কলারণ দাখিল মাদরাসার সহ-সুপার মোঃ আব্দুস জব্বার শেখকে শিক্ষক হাজিরা খাতা দেখাতে বললে তিনি হাজিরা খাতা দেখাতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন। আবারো হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা বলে পরিচয় দেন এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের উৎকোচ দেয়ার প্রস্তাব দেন।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষিকার শাশুড়ী শ্যামলী রানী ডাকুয়া জানান, আমার ছেলে উত্তম কুমার ডাকুয়া ও পুত্রবধূ কনক প্রভা ডাকুয়া বর্তমানে ভারতে আছে।
উত্তর কলারণ দাখিল মাদরাসার সভাপতি ও ইউপি সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, শিক্ষক কনক প্রভা ডাকুয়া চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার কথা আমাকে মৌখিকভাবে বলে গিয়েছেন। তবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেয়ার বিষয়টি আমি জানি না।
এদিকে মাদরাসার সুপার মোঃ আলী হায়দার খানের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করে ফোনটি বন্ধ করে রাখেন।
সৌজন্যে- নয়া দিগন্ত