টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মারকাটারি ব্যাটিং ছিল না। তবে যে উত্তেজনাকর লড়াইয়ের লক্ষ্যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সৃষ্টি, সেটা বেশ ভালোভাবেই দর্শকদের উপহার দিল বিশাখাপত্তমে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম ম্যাচটি। রূদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে শেষ বলে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারি অস্ট্রেলিয়া।
পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য। একবার মনে হচ্ছিল, খুব সহজেই জিতে যাবে অস্ট্রেলিয়া, আরেকবার ভারত। ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত এই ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলেছে। সেই খেলায় শেষ দান মেরে দিয়েছে অজিরা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে একটা সময় লড়াকু পুঁজি গড়ার পথেই ছিল ভারত। ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটেই তারা তুলে ফেলেছিল ৮০ রান। রোহিত শর্মা ৫ রানে ফিরলেও আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল তুলে নেন দুর্দান্ত ফিফটি (৩৬ বলে ৫০)। বিরাট কোহলিও করেন ১৭ বলে ২৪।
কিন্তু দলীয় ৯২ রানের মাথায় লোকেশ রাহুল ফেরার পরই যেন মরক লেগে যায় ভারতের ইনিংসে। পরের ব্যাটসম্যানরা ছিলেন কেবল আসা যাওয়ার মিছিলে। একটা প্রান্ত ধরে মহেন্দ্র সিং ধোনি লড়াই করেছেন। কিন্তু তার ৩৭ বলে গড়া ২৯ রানের ইনিংসটি মোটেই টি-টোয়েন্টির সঙ্গে মানানসই ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১২৬ রানে থামে ভারতের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে নাথান কল্টার-নাইল ৪ ওভারে ২৬ রান খরচায় নেন ৩টি উইকেট।
লক্ষ্য ১২৭ রানের, টি-টোয়েন্টি ফরমেটের হিসেবে মামুলিই বলা চলে। তবে ৫ রানের মধ্যে মার্কাস স্টয়নিস আর অ্যারন ফিঞ্চকে হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। সেই ধাক্কা অবশ্য সামলে উঠেছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আর ডি’আরচি শর্ট। তৃতীয় উইকেটে ৮৫ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৩ বলে ৫৬ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে এই জুটিটি ভাঙেন ইয়ুজবেন্দ্র চাহাল।
শর্টও ফিরে যান ৩৭ রান করে। এরপরই হঠাৎ ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ার অবস্থা হয় অস্ট্রেলিয়ার। টার্নার (০), হ্যান্ডসকম্ব (১৩), কল্টার-নাইল (৪) একে একে পরের ব্যাটসম্যানরা সাজঘরে ফিরলে ১২ রানের ব্যবধানে ৪টি উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারিরা।
শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১৪ রান, উইকেটে ছিলেন না কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। ম্যাচ তখন ভারতের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার লোয়ার অর্ডারের ঝাই রিচার্ডসন আর প্যাট কামিন্স দলকে জিতিয়ে দেন।
উমেশ যাদবের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেলস নেন কামিন্স। পরের তিন বলে বাউন্ডারি, ডাবল আর একটি সিঙ্গেল রিচার্ডসনের। ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরে দেন কামিন্স। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। কামিন্স বোলারের পাশ দিয়ে বল ঠেলেই দ্রুতগতিতে ডাবল নিয়ে মেতে উঠেন উল্লাসে। দল হারলেও ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ দারুণ বোলিং করেছেন। ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে তিনি নেন ৩টি উইকেট।