Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

razu-sritiগত ২৮ জানুয়ারি ধুমধাম করে মেয়ে আফরুজা সুলতানা স্মৃতির (২৪) বিয়ে দেন বাবা মো. আবুল খায়ের। ভালোই চলছিল মেয়ের নতুন সংসার। কিন্তু বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতের আচমকা আগুনে জামাতা মাহবুর রহমান রাজু ও তার ছোট ভাই মাসুদ রানা পুড়ে অঙ্গার হয়।

রাজুর শ্বশুর আবুল খায়ের কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘এই ছিল কপালে! কতো আয়োজন করে বন্ধু সাহেব উল্লাহর ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস মাস না যেতেই মা (মেয়ে) আমার বিধবা হলো। ওর সামনে আমি কি করে দাঁড়াবো।’

chardike-ad

চকবাজারেই কাপড়ের ব্যবসা করেন তিনি। দেখে শুনেই মেয়েকে রাজুর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আগুনের খবর মোবাইলে পেয়ে ছুটে আসি। কিন্তু দোকানের কাছেই যেতে পারিনি। পরে শুনেছি ওরা আগুনের ভয়ে দোকানেরর সাটার বন্ধ করে দিয়েছিল। আর বের হতে পারেনি। ওখানেই ওরা…!

আবুল খায়ের বলেন, আগুন লাগার আধাঘণ্টা আগেও রাজুর মা দেখা করে গেছে। বেহাই (রাজুর বাবা) টাকা নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘সরকারের উচিত এসব বিষয় খেয়াল রাখা। যেখানে সেখানে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটবে আর মারা যাবে সাধারণ মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হবো আমরা। সিলিন্ডার ব্যবসা বন্ধ করা উচিত, কড়া নজরদারিতে রাখা উচিত আগুন বোমা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজুরা তিন ভাই। রানা টেলিকম নামে তাদের দোকান ছিল। সেখানে ফোন-ফ্যক্সসহ মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ বিক্রি করতো তারা। ছোট্ট ভাইকে নিয়ে বাবা মাসহ ঢাকাতেই চুরি হাট্টার পাশের একটা ভবনে থাকতো।

রানা রাজুর বাবা সাহেব উল্লাহর বন্ধু নিজাম উদ্দিন ঢামেক হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নাকাটি করে বলছিলেন, নিজের ছেলের মতো ওদের ভালবাসি। কতো স্মৃতি ওদের সঙ্গে। পরিশ্রমী ছেলে দুটা এভাবে মারা যাবে ভাবতে পারছি না। বন্ধু আমার ব্যবসা করতো এখন বয়স হয়েছে। রানা রাজুই ছিল উপার্জনক্ষম। ছেলে দুটা মরে যাওয়ায় বন্ধুর বেঁচে থাকার মেরুদণ্ডই ভেঙে গেলো। রাজুর মরদেহের সিরিয়াল ৪০, রানার ১২। মরদেহ নিয়ে গ্রামেরবাড়ি যাবো। সেখানেই দাফন হবে।

রাজুদের দোকানের পাশেই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন তাহমিনা বেগম। তিনিও খোঁজ নিতে এসে বলেন, নিয়মিত ওদের দোকানে ফ্লেক্সি দিতাম, কেনাকাটা করতাম। আগুনে নিজের বোন তানজিলাও দগ্ধ হন। তবে এখন সুস্থ। বোনকে বাসায় রেখে তাদের দুইভাইকে শেষবারের মতো দেখতে এসেছি।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ