বাংলাদেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা আন্তর্জাতিক এয়ারক্রাফট লিজিং কোম্পানি এয়ারক্যাপ ও দি বোয়িং কোম্পানির যৌথ ঘোষণা অনুযায়ী খুব শিগগির বিশ্বের সর্বাধুনিক এয়ারক্রাফট বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বহরে যুক্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সর্বাধুনিক বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স পরিচালনা করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এয়ারক্যাপ হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও সক্রিয় বাণিজ্যিক এয়ারক্রাফট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। যাদের মালিকানায় এক হাজারের অধিক এয়ারক্রাফট আছে এবং আরও তিন শতাধিক এয়ারক্রাফট ক্রয় প্রক্রিয়ায় আছে।
ইউএস-বাংলা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই যাত্রী সাধারণের জন্য আরামদায়ক, আধুনিক ও গ্রহণযোগ্য বিমান সংযুক্ত করাই ছিলো প্রধান লক্ষ্য। বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত এয়ারলাইন্স গুলোতে বর্তমানে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য এয়ারক্রাফট বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স যুক্ত হচ্ছে।
ইউএস-বাংলা বাংলাদেশে প্রথম বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে। যা ২০১৮ সালের বিমান পরিবহন সেবায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সর্বাধুনিক বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স এর অন্তর্ভূক্তিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় এয়ারলাইন্সের অগ্রযাত্রা লক্ষ্যনীয়। ইউএস-বাংলার বিমান বহরে এমন কোনো এয়ারক্রাফট ব্যবহৃত হয় না, যে এয়ারক্রাফট বর্তমানে উৎপাদন প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই।
খুব শিগগির দু’টি ব্র্যান্ড নিউ এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের এয়ারক্রাফট ইউএস-বাংলার বিমান বহরে যুক্ত হতে চলেছে। যাত্রী সাধারণের চাহিদা অনুযায়ী, ইউএস-বাংলা-ই প্রথম কোনো বেসরকারি এয়ারলাইন্স, যা ফ্যাক্টরী থেকে সরাসরি এয়ারক্রাফট সংগ্রহ করতে যাচ্ছে।
বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স এয়ারক্রাফটে সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় জেট বিমানটিতে সর্বশেষ প্রযুক্তি সরবরাহ করে বোয়িং ৭৩৭। ৭৩৭ ম্যাক্স এয়ারক্রাফটে সংযুক্ত অত্যাধুনিক কেবিন ডিজাইন ও ইন-ফ্লাইট এন্টারটেননমেন্ট সিস্টেম বিশ্বব্যাপী নতুন নতুন গন্তব্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তুলনামূলক কম খরচ, পরিবেশবান্ধব ও সময়ের কারণে বিশ্বব্যাপী এয়ারালাইন্স কোম্পানির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে।
বিশ্বের অনেক নামকরা এয়ারলাইন্স ইতিমধ্যে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স এয়ারক্রাফট ব্যবহার শুরু করেছে। উল্লেখযোগ্য এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে রয়েছে- মালয়শিয়া এয়ারলাইন্স, টার্কিশ এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, আমেরিকান এয়ারলাইন্স, চায়না ইস্টার্ণ, চায়না সাউদার্ণ, জেট এয়ারওয়েজ, স্পাইস জেট, ফ্লাই দুবাই সহ আরো অনেক এয়ারলাইন্স।
এছাড়া আগামী ৩১ মার্চ থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য ভারতের চেন্নাইতে সপ্তাহে তিনদিন ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে। চেন্নাই মূলত চিকিৎসা সেবার জন্য বাংলাদেশীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি কোনো এয়ারলাইন্স সরাসরি বাংলাদেশ থেকে চেন্নাই ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে।
২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ‘ফ্লাই ফাস্ট- ফ্লাই সেফ’ স্লোগান নিয়ে ২টি ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে অভ্যন্তরীন রুটে যাত্রা শুরু করেছিল। বর্তমানে চারটি বোয়িং ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ সহ মোট সাতটি এয়ারক্রাফট রয়েছে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে।
ইউএস-বাংলার সময়ানুবর্তিতা, নিরাপত্তা নির্দেশনা এবং কর্মীদের দক্ষতার কারণে গত সাড়ে চার বছরের অধিক সময়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ৫৭ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে। ফ্লাইটের অনটাইম পারফরমেন্স শতকরা ৯৮.৭। অভ্যন্তরীণ সকল রুট ছাড়াও বর্তমানে সিংগাপুর, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, দোহা, মাসকাট ও কলকাতা রুটে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের পরিচয় বহনকারী একটি প্রতিষ্ঠান। এদেশের মানুষের আশা আকাংখা ও সম্ভাবনা ধারণ করেই ইউএস-বাংলার পথ চলা। যাত্রা শুরু থেকেই সম্মানিত যাত্রী, ট্রাভেল এজেন্টস, কর্পোরেট বডি ও শুভানুধ্যায়ী ইউএস-বাংলার উপর আস্থা রেখে সামনে এগিয়ে যাবার সাহস জুগিয়েছেন। ভবিষ্যতে সবার সহযোগিতায় ইউএস-বাংলা সামনের দিকে এগিয়ে দেশের সুনাম বজায় রাখবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ, এয়ারক্যাপ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চীফ কর্মার্শিয়াল অফিসার ফিলিপ স্ক্রাগস্, লিজিং কোম্পানির সুতেশ সেলভারাতনাম, দি বোয়িং কোম্পানির ডাইরেক্টর সেলস্ এন্ড মার্কেটিং আহসেন রাজপুতসহ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর কর্মকর্তারা।
সৌজন্যে- যুগান্তর