Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

motinসন্তানের ইচ্ছা পূরণের জন্য বাবা-মা কিনা করতে পারেন। প্রিয়জনদের ছেড়ে কতজনই পাড়ি দিচ্ছেন দূরপ্রবাসে। তেমনই একজন নোয়াখালীর আব্দুল মতিন (৫৮)। দেশে তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। ১৯৯৬ সালের দিকে ভাগ্য বদলের আশায় মতিন পরিচিত একজনের কাছে পাসপোর্ট জমা দেন। মাসের পর মাস চলে যায় তবুও ভিসা আসে না। হঠাৎ খবর আসে কুয়েতের ভিসা হয়েছে।

মতিন খুশিতে আত্মহারা, সবকিছু ঠিকঠাক করতে থাকে। টাকা-পয়সা জোগাড় করে দেরি না করে চলে আসেন কুয়েতে। দেশটির তানজিনকো নামের একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে কাজ মেলে। এরপর ওই কোম্পানিতেই কেটে গেছে ২৩টি বছর।

chardike-ad

বর্তমানে তিনি কুয়েতের সুক সালমিয়ার বাহিরে আরবানায় ডিউটি করেন। সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টানা ডিউটি করেন আব্দুল মতিন। পাশাপাশি অভারটাইমও বাদ দেয় না। বেতন পাওয়া মাত্রই পাঠিয়ে দেন দেশে। কারণ ছেলে-মেয়েরা চেয়ে থাকে বাবা কবে টাকা পাঠাবে।

কিছুটা সময় আলাপ হয় মতিনের সঙ্গে। মতিন বলেন, ‘এখানে আমি বেশ আছি। আমাদের কোম্পানি কুয়েতের অনেক পুরাতন। বেতন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। মাস শেষ হওয়ার আগেই দেনা-পাওনা মিটিয়ে দেয়। এ ছাড়া বছরে এক মাসের ছুটি রয়েছে। ইচ্ছেমতো দেশে ছুটি কাটানোর সুযোগ রয়েছে। ছুটিতেও বেতন পাই। কুয়েতের অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় আমাদের কোম্পানির শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা অনেক ভালো বলেও জানান।

এ বৃদ্ধা বলেন, ‘মেয়েগুলোর বিয়ে দিয়েছি। আমার একটা ছেলেকে ওমানের পাঠিয়েছিলাম। কোম্পানি ভালো না হওয়ায় কয়েক মাস পর আবার দেশে ফেরত আসে। এখন এলাকায় ছোটখাটো মুদির দোকান করে চলছে। আরেকজন কুমিল্লা ট্রাসপোর্ট কোম্পানিতে চাকরি করে।’ সেও ভালোভাবে চলছে বলে জানান।

বয়স বেড়েছে তবুও কেন বিদেশ জানতে চাইলে বলেন, ‘দেশে গিয়ে কি করবো, এখানেই ভালো আছি। আরও কিছুদিন থাকার ইচ্ছে আছে প্রবাস নামক খাচাবিহীন কারাগারে। যতক্ষণ এই দেহে প্রাণ আছে খেতেও হবে, করতেও হবে জীবন সংগ্রাম।

লেখক- সাদেক রিপন