Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

bd-indiaবাংলাদেশ থেকে প্রায় হাজার দুয়েক সিভিল সার্ভেন্ট বা আমলা তাদের কেরিয়ারের মাঝপথে প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যাবে বলে দুই দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে। শুক্রবার দিল্লিতে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশের এ কে আবদুল মোমেন ও ভারতের সুষমা স্বরাজের নেতৃত্বে এদিন পঞ্চম যৌথ কনসাল্টেটিভ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকেই এই মর্মে একটি সমঝোতাপত্র বা মেমোরান্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিংও (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে এর আগেও সরকারি কর্মকর্তা বা সেনাবাহিনীর সদস্যরা নানা ধরনের প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার জন্য নিয়মিতই ভারতে যেতেন, তবে এদিনের সমঝোতায় সেটা অনেক ব্যাপক ও আনুষ্ঠানিক রূপ পেল। সমঝোতায় বলা হয়েছে, প্রথম দফায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ১৮০০ কর্মকর্তা – যারা তাদের কেরিয়ারের মাঝামাঝি পর্বে আছেন – তারা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যাবেন।

chardike-ad

এই কর্মসূচীকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভেন্টদের জন্য ‘ট্রেনিং ও ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ (প্রশিক্ষণ ও সামর্থ্য নির্মাণ) প্রোগ্রাম। বাংলাদেশের তরফে এই সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছেন দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি। আর ভারতের হয়ে ওই সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছেন দিল্লিতে ‘ন্যাশনাল সেন্টার অব গুড গভর্ন্যান্সে’র (এনসিজিজি) প্রশাসনিক প্রধান শ্রীমতি পুনম সিং।

ভারত সরকারের প্রশাসনিক সংস্কার মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনসিজিজি একটি স্বশাসিত সংস্থা, যাদের নথিভুক্ত কার্যালয় হল উত্তরাঞ্চলের শৈল শহর মুসৌরিতে। এই মুসৌরিতেই আবার ভারতের ভাবী আমলারা – যারা ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস বা আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন – তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।

ভারতে সরকারি সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে যে আমলারা প্রশিক্ষণ নিতে আসবেন তাদের মুসৌরি-সহ দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন সরকারি কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

তবে হঠাৎ কেন এত বেশি সংখ্যায় আমলাদের ভারতে এনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো অবশ্য এদিন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে ভারতে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিস যেমন উপকৃত হবে, তেমনি সে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোতে ভারতের ‘আউটরিচ’ আরও অনেক প্রসারিত হবে।

দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো জয়িতা ভট্টাচার্যের কথায়, “ভারত ও বাংলাদেশের আইনকানুন বা প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অনেক মিল। ফলে বাংলাদেশী আমলাদের ভারতে ট্রেনিং নেওয়াটা খুবই সুবিধাজনক।”

“তা ছাড়া সর্বত্রই এখন সরকারি কর্মকর্তা বা আমলাদের এখন খুব বেশি করে ‘ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোজার’ বা আন্তর্জাতিক স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা দরকার হয়। আর সে দিক থেকেও ঘরের পাশে ভারতে এসে ট্রেনিং নেওয়াটাই তাদের জন্য সহজ।”

তিনি আরও বলছিলেন, ভারত থেকে যে কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে যাবেন পরে তারাই যখন প্রশাসনের নানা শীর্ষ পদে যাবেন – তখন তাদের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে সুবিধে হতে পারে, ভারতের দিক থেকে এমন ভাবনাও হয়তো কিছুটা কাজ করেছে।

সৌজন্যে- বিবিসি বাংলা